‘তেরঙ্গা’য় সব রাজনীতিকে মেলালেন আডবাণী
তেরঙ্গা ঘুড়ি। তেরঙ্গা বেলুন। হাতে হাতে তেরঙ্গা ব্যান্ড। বুকে তেরঙ্গা ব্যাজ।
আর সিনেমার নামও ‘তেরঙ্গা।’
স্বাধীনতা দিবসের ছ’দিন আগে থেকেই রাজধানীর বুকে শুরু হয়ে গেল তেরঙ্গার উৎসব। উদ্যোক্তা বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। পঁচাত্তর মিনিটের ‘তেরঙ্গা’ ছবিটিও বানিয়েছেন তাঁর কন্যা প্রতিভা। আজ দিল্লির সিরিফোর্ট অডিটরিয়ামে সেই ছবির প্রদর্শনে সব রাজনৈতিক দল-মতের মেলবন্ধন ঘটালেন আডবাণী।
বিজেপির নেতারা তো রয়েছেনই। রাজ্যসভায় শপথ নিয়ে সোজা চলে এসেছেন হেমা মালিনী ও স্মৃতি ইরানি। শরিক শিবসেনা নেতা মনোহর জোশী ছাড়া রয়েছেন কংগ্রেসের শশী তারুর, তারিক আনোয়ার থেকে সস্ত্রীক নবীন জিন্দল। অনেক দিন পরে প্রকাশ্যে জয়া জেটলি। এমনকী তৃণমূলে পা বাড়ানো আন্দামানের ‘বিদ্রোহী’ বিজেপি সাংসদ বিষ্ণুপদ রায়কেও দেখা গিয়েছে সিরিফোর্টে বসে ‘তেরঙ্গা’ দেখছেন।
সংসদের অধিবেশন চলাকালীন দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগে শাসক-বিরোধী পক্ষের তরজায় যখন হাওয়া গরম হয়ে উঠেছে, সেই সময় মেয়ের ছবির প্রদর্শনে রাজনীতির ভেদাভেদকে গুরুত্ব না দেওয়ার নজির তৈরি করলেন আডবাণী।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুব সংগঠনের অনুষ্ঠানে। নয়াদিল্লিতে মঙ্গলবার। ছবি: এএফপি
লোকসভার বিরোধী দলনেতার পদ থেকে যখন তিনি সরে গেলেন, অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন এ বার অবসর নেবেন আডবাণী। কিন্তু বিজেপির এই প্রবীণ নেতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর যাত্রা শেষ হচ্ছে না। তার পরেও নিজের বক্তব্য প্রকাশের জন্য নিয়মিত ব্লগ লেখেন, বক্তৃতা দেন। বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়ান। সম্প্রতি দলের সহকর্মী বেঙ্কাইয়া নাইডুর উৎসাহে সংসদের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদে। রীতিমতো পিকনিকের মেজাজে কাটিয়েছেন সেখানে। বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে পি চিদম্বরমের অহি-নকুল সম্পর্ক হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক ফোনে সাড়া দিয়ে বিজ্ঞান ভবনে জাতীয় সম্প্রীতি সংক্রান্ত একটি সম্মেলনেও নির্দ্বিধায় চলে যান আডবাণী। নিজের বই নিয়ে সস্ত্রীক চলে গিয়েছিলেন দশ জনপথে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে। রাহুল গাঁধীর পা মচকে যাওয়ার পর নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। সংসদে নিজের কক্ষে সপুত্র সনিয়ার সঙ্গে চায়ের আড্ডাতেও মেতেছেন। এখন তো খুব ভাব হয়েছে সিপিআই নেতা ডি রাজার সঙ্গে। নিয়মিত বই দেওয়া-নেওয়া করেন তাঁরা।
আজ অনুষ্ঠানের শুরুতেই আডবাণী ভূয়সী প্রশংসা করেন নবীন জিন্দলের। আডবাণী যখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় কংগ্রেসের এই তরুণ নেতা জাতীয় পতাকায় সকলের অধিকার নিয়ে সরব হয়েছিলেন। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে এই অধিকার নিয়ে লড়াই করে জয়লাভও করেছিলেন। নবীনের তারিফ করার পাশাপাশি এ-ও জানাতে ভুললেন না, আজকের অনুষ্ঠানে তেরঙ্গা ব্যাজ ও হাতের ব্যান্ড আসলে স্পনসর করেছেন কংগ্রেসের এই নেতাই। সঙ্গে সঙ্গে হাততালি সভাকক্ষ জুড়ে।
দুর্নীতির নানা অভিযোগে কংগ্রেস এখন প্রবল চাপে। সেই রাজনৈতিক জায়গাটি বিজেপি দখল করতে চাইলেও নিজেরাই নেতৃত্বের সঙ্কটে দীর্ণ। যে ভাবে কংগ্রেস দুর্বল হচ্ছে, বিরোধীরা না চাইলেও মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনাও উঁকি মারছে। এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতেই আডবাণীর এই অনুষ্ঠান। অনেকেরই প্রশ্ন, রাজনীতির এই সন্ধিক্ষণে আডবাণী কি নিজের রাজনৈতিক ভিত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করলেন? মেয়ের ছবির হাত ধরে বিজেপির এই প্রবীণ নেতা কি দেশনেতা হিসাবে নিজেকে তুলে ধরতে চাইলেন?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.