|
|
|
|
| |
| পুজো-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী |
| নিজস্ব সংবাদদাতা |
 ফি বছরই শহরের দুর্গাপুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে কলকাতা পুলিশ, দমকল-সহ বিভিন্ন দফতর। কখনও কখনও বৈঠক করেছেন দমকলমন্ত্রীও। কিন্তু এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পুজো উদ্যোক্তাদের বৈঠকের নজির নেই। এ বার রাজ্যের নয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান শহরের পুজো কমিটির কর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে। মহাকরণ সূত্রের ব্যাখ্যা, শহরের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে প্রশাসনের সমন্বয় বাড়াতেই এই উদ্যোগ। পাশাপাশি, উৎসবের সময়ে নিরাপত্তা দিতেও উদ্যোক্তাদের পাশে চান মমতা।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এই শহরে প্রায় ১২০০ দুর্গাপুজো হয়। কিছু পার্কে প্যান্ডেল করা হয়, তেমন আবার মণ্ডপ তৈরি হয় শহরের বিভিন্ন রাস্তার উপরেও। এর মধ্যে অনেকগুলি বেশ বড় মাপের পুজো। ফলে, তাদের মণ্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে খোলা পর্যন্ত ওই রাস্তাগুলি আটকে থাকে। এর জেরে অবরুদ্ধ হয় আশপাশের ছোটখাটো রাস্তাও। পুজোর সময়ে বহু উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগও ওঠে, যার অধিকাংশই নাগরিক সমস্যা সংক্রান্ত।
এর সঙ্গেই রয়েছে, বড় মাপের পুজোর বিরুদ্ধে দমকল আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ। বেশ কয়েক বছর ধরে শহরের বড় পুুজোগুলি থিমের দিকে ঝুঁকছে। থিমের প্যান্ডেল তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে অনেক সময়েই আপত্তি তোলে দমকল। তা নিয়ে বেশ জলঘোলাও হয়। বিগত কয়েক বছরে সেই সমস্যা মেটাতে তৎকালীন দমকলমন্ত্রীও হস্তক্ষেপ করেছিলেন।
মহাকরণ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী চান শহরের পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে এই সব সমস্যা নিয়ে কথা বলতে। যার মাধ্যমে পুজো কমিটিগুলিকে সরকারের মনোভাব বোঝাতে পারবেন তিনি। পাশাপাশি, কমিটিগুলির বিভিন্ন সমস্যার কথাও শুনতে চান মমতা। তবে এ সবের মধ্যে পুজোর উদ্যোগে যে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না, সে বার্তাও মুখ্যমন্ত্রী দিতে চান বলে মহাকরণ সূত্রে খবর। মমতা চাইছেন, রাজ্যের সব থেকে বড় উৎসবের সময়ে শহরে যেন কোনও সমস্যা তৈরি না হয়। সরকার পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে কী সহযোগিতা চায়, তা-ও বৈঠকে জানানো হবে।
প্রশাসন সূত্রের ব্যাখ্যা, উৎসবের সময়ে নাগরিক সমস্যার সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ চিন্তা থাকে সরকারের। আশঙ্কা থাকে মূলত আপৎকালীন পরিস্থিতি ঘিরে। বিগত বছরগুলিতে বেশ কয়েকটি পুজো প্যান্ডেলের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও দমকল সূত্রের অভিযোগ, বহু পুজো প্যান্ডেলে নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হয় না। যার ফলে পুজো প্যান্ডেল সংলগ্ন এলাকায় প্রয়োজনে একটি মোটরবাইকও ঢুকতে পারে না। এ বার সেই ‘নিয়ম ভাঙার নিয়ম’ বদলাতে চান মমতা। মহাকরণ সূত্রে জানানো হয়েছে, পুজো উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সে ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, উদ্যোক্তাদের এমন ভাবে প্যান্ডেল তৈরি করতে বলা হবে, যাতে বড় রাস্তায় মণ্ডপের পাশ দিয়ে অন্তত একটি গাড়ি ঢুকতে পারে। পাশাপাশি, আশপাশের রাস্তা বা গলি দিয়ে যাতে মোটরবাইক চলাচল করতে পারে, সে বিষয়েও উদ্যোক্তাদের খেয়াল রাখতে বলা হবে।
মহাকরণ সূত্রের খবর, পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই বৈঠকে হাজির থাকবেন পুলিশ, দমকল, বিদ্যুৎ সংস্থার কর্তারাও।
এ দিকে মঙ্গলবার পুজো নিয়ে দমকল, কলকাতা পুরসভা, বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করল কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, উৎসবের সময়ে কী কী ব্যবস্থা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয় ওই বৈঠকে। বিশেষত সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্য পুলিশের আওতাধীন যে এলাকাগুলি কলকাতা পুলিশের অধীনে আসছে, সেগুলির পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে হাজির ছিলেন, রেল, কেএমডিএ এবং টেলিফোন-কর্তারাও। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম জানান, আগামী ১৩ অগস্ট শহরের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করবেন তাঁরা। |
|
|
 |
|
|
