টেন্ডার কমিটিতে নেতা নয়
কোটার ‘দাক্ষিণ্য’ এ বার বন্ধ হল কেএমডিএ-তেও
কোটা প্রথার মাধ্যমে ‘দাক্ষিণ্য’ বন্ধ করতে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কেএমডিএ-র ফ্ল্যাট বিলির ক্ষেত্রেও তুলে দেওয়া হল কোটা। এর আগে হিডকো এবং আবাসন দফতরের কোটাও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে ফ্ল্যাট বা জমি বরাদ্দের বিষয়টিতে পুরোপুরি স্বচ্ছতা আসবে বলে সরকারের দাবি। একই সঙ্গে এ দিন কেএমডিএ-র টেন্ডার কমিটিতে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে না-রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
বামফ্রন্টের আমলে সরকারি বা যৌথ উদ্যোগের আবাসন প্রকল্পে ৬ শতাংশ ফ্ল্যাট বরাদ্দ থাকত সংশ্লিষ্ট নির্মাতা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের জন্য। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওই কোটা প্রথা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। পছন্দের বহু লোককে আবাসনমন্ত্রী তাঁর কোটায় নিউ টাউনে ‘অবৈধ ভাবে’ জমি-ফ্ল্যাট বরাদ্দ করেছেন বলে আগেই অভিযোগ এনেছিলেন মমতা। ওই সময়ে নিউ টাউন-রাজারহাটে সভা ও পদযাত্রাও করেন তিনি। বাম সরকারের সমালোচনা করে মমতা তখন ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে কোটা প্রথা তুলে দেবেন। জবাবে তৎকালীন আবাসনমন্ত্রী তথা হিডকো-র চেয়ারম্যান গৌতম দেব জানিয়ে দিয়েছিলেন, “জমি-ফ্ল্যাট বিলিতে কোটা প্রথা পুরোদস্তুর আইনসিদ্ধ। এই প্রথা বন্ধ করা হবে না।” আরও এক ধাপ এগিয়ে ওই সময়ে তিনি বলেন, “যাঁকে খুশি আমার কোটায় জমি-ফ্ল্যাট দেব।”
মঙ্গলবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কেএমডিএ-র নয়া পরিচালনমণ্ডলীর বৈঠকে কোটা প্রথা বিলোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেএমডিএ-র ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে অতীতে কোনও অনিয়ম হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে মমতা ‘হিডকো’ ও ভাঙর-রাজারহাট উন্নয়ন সংস্থা (‘ব্রাডা’)-র পরিচালনপর্ষদ ভেঙে দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই অঞ্চলের কোনও সরকারি আবাসনে ফ্ল্যাট-বরাদ্দে আর কোটার ব্যবস্থা থাকবে না। এ দিন কেএমডিএ-র আবাসন প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পরে এ দিন কেএমডিএ-র ভাইস-চেয়ারম্যান শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ বার থেকে সব ফ্ল্যাট বিলি হবে লটারির ভিত্তিতে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের (এলআইজি এবং এমআইজি) আবেদনকারীরা এতে আরও বেশি করে উপকৃত হবেন। কেএমডিএ-র ফ্ল্যাট বিলি নিয়ে আগে অনিয়ম হয়ে থাকলে তা-ও মুখ্যমন্ত্রী বিস্তারিত জানাতে বলেছেন।” পাশাপাশি এ দিনের বৈঠকে কেএমডিএ-র আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে শোভনবাবুকে ব্যবস্থা নিতেও বলেন মমতা।
ফ্ল্যাটে কোটা প্রথা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি এ দিনের বৈঠকে কেএমডিএ-র টেন্ডার কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। নয়া কমিটিতে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে রাখা হচ্ছে না। তার বদলে ‘হিডকো’ এবং ‘নবদিগন্ত’-র পরিচালনমণ্ডলীর মাথায় আইএএস অফিসারকে বসিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দুই সংস্থার মাথায় বসানো হয়েছে রাজ্যের নগরোন্নয়ন সচিব এবং পুর-সচিবকে। কেএমডিএ-র টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নগরোন্নয়ন সচিব ছাড়াও রাখা হয়েছিল দু’জন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে। সেই দু’জনকে বাদ দিয়েই নতুন কমিটি তৈরি হবে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী টেন্ডার কমিটি গড়ার যে সূত্র বাতলে দেন তাতে পুর ও নগরোন্নয়ন, এই দুই সচিব ছাড়াও রাখা হয়েছে অর্থসচিব, কেএমডিএ-র চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার এবং দু’জন ‘টেকনিক্যাল’ প্রতিনিধিকে। বৈঠকের পরে শোভনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, এ রকম ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের থাকা উচিত নয়।”
পদ্মপুকুরে কাজ শুরুর নির্দেশ। হাওড়ার পদ্মপুকুরে নির্মীয়মাণ জল প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মহাকরণে তাঁর নেতৃত্বাধীন কেএমডিএ-র নয়া পরিচালনমণ্ডলীর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেশ কিছু দিন ধরে ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
২০০৭-এ এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১০-এর জানুয়ারিতে। কাজ শেষ না হওয়ায় হাওড়া পুরসভার ৪৫ থেকে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক লক্ষ বাসিন্দা পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছেন না। এ দিনের বৈঠকে হাওড়ার বিধায়ক তথা পরিচালনমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য জটু লাহিড়ী বলেন, “হাওড়া পুরসভা ‘ম্যাচিং গ্রান্ট’ না-দেওয়ায় কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক গত অর্থবর্ষের চতুর্থ কিস্তির টাকা দেয়নি। মূলত এই কারণে প্রকল্পের কাজ আটকে গিয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.