নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি
জঙ্গলমহলকে আলাদা অঞ্চলের স্বীকৃতির প্রস্তাব
ঙ্গলমহলে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি করলে, বিশেষ ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য।
বন্দুকের বদলে বিনিয়োগ। পিছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলের ক্ষোভ প্রশমনে এই লগ্নি-দাওয়াই প্রয়োগের পরিকল্পনা শুরুতেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতে একেবারে পৃথক অঞ্চল হিসেবে জঙ্গলমহলকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় রাজ্য সরকার। যাতে সেখানে বিনিয়োগ করলে, অনেকটাই বেশি ‘ইনসেনটিভ’ বা আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। তা ছাড়া, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির জন্য আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধির পথও খোলা রাখা হয়েছে এই নয়া নীতির খসড়া প্রস্তাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই ২০০৯ সালে নতুন করে ‘ইনসেনটিভ’ বা উৎসাহ প্রকল্প তৈরি করেছিল পূর্বতন বাম সরকার। যার আওতায় রাজ্যকে ভাগ করা হয়েছিল তিনটি অঞ্চলে ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’। ‘এ’ অঞ্চলে রয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এলাকা। ‘বি’-তে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা-সহ সাতটি জেলা। আর ‘সি’ অঞ্চলে মুর্শিদাবাদ মালদহ, পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, কোচবিহার-সহ এগারোটি জেলা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত নয়া নীতিতে চিহ্নিত করা হচ্ছে আরও একটি অঞ্চল (‘ডি’)। যার অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে জঙ্গলমহলকে।
সাধারণত, এই বিভাজনের ভিত্তিতেই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে মূলধন খাতে ভর্তুকি-সহ বিভিন্ন আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেয় রাজ্য। যেমন, পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়লে, সাত বছর এই ভর্তুকি মেলে। একই সময় ধরে পাওয়া যায় সুদ এবং প্রশিক্ষণ-বাবদ খরচের উপর ভর্তুকিও। সেখানে কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকায় তা দেওয়া হয় পাঁচ বছরের জন্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এ ভাবেই তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি টানতেই জঙ্গলমহলকে পৃথক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে রাজ্য। পাখির চোখ করছে ওই অঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিকে। ঠিক যেমন অ্যানিমেশন শিল্পে স্থানীয় মানুষদের প্রশিক্ষণের পর চাকরি দিলে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বাড়তি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে তারা।
সম্প্রতি বণিকসভা সিআইআই-এর অনুষ্ঠানে এসে শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, খসড়া-নীতি প্রায় তৈরি। তাঁর দাবি, মূলত ছোট ও মাঝারি সংস্থার দিকে নজর রেখেই তৈরি করা হচ্ছে নীতি। জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ‘হাব’ তৈরির পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওই সংস্থাগুলিকে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হবে। রয়েছে শিল্প-গুচ্ছ গড়ে তোলার পরিকল্পনা। প্রতিযোগিতার বাজারে ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলিকে এগিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি-পরিকাঠামো তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে খসড়া স্তরে থাকায় নীতির খুঁটিনাটি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি পার্থবাবু। এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরাও।
প্রথমে এই খসড়া পেশ করা হবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তার পর পরামর্শের জন্য তা এন আর নারায়ণমূর্তি এবং স্যাম পিত্রোদার কাছে পাঠানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী খসড়া অনুমোদন করলে, তবেই তথ্যপ্রযুক্তি নীতি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পার্থবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে প্রথম বার শিল্পমহলের মুখোমুখি হওয়ার সময়ই জঙ্গলমহলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়ার কথা বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই পথে হেঁটেই প্রস্তাবিত তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতে জঙ্গলমহলকে আলাদা অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে রাজ্য। তবে সরকারি সুযোগ-সুবিধার টানে শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে সত্যিই সংস্থাগুলি জঙ্গলমহলে পা রাখবে কিনা, তার উত্তর দেবে সময়ই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.