দামোদরে জল বাড়ছে, তবু স্বস্তি শিল্পাঞ্চলে
টানা দু’দিনের লাগামছাড়া বর্ষণের পরে কিছুটা ধাতস্থ হয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যে কার্যত থমকে গিয়েছিল, তা-ও কিছুটা ছন্দে ফিরেছে।
যদিও মঙ্গলবারও বৃষ্টি হয়েছে গোটা শিল্পাঞ্চলেই। অবিরাম বৃষ্টিতে যাতে শহর অচল না হয়ে পড়ে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভাগুলি। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ত্রাণসামগ্রীও মজুত রাখা হয়েছে।
রবিবার থেকে টানা বর্ষণে আসানসোলের বেশ কিছু অঞ্চলে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এ দিন থেকে জমা জল সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। আসানসোল পুরসভা এলাকার গাড়ুই নদী সংলগ্ন কসাই মহল্লা ও মুসুদ্দি মহল্লার বেশ কিছু অংশ জলমগ্ন। মেয়র তাপস বন্দোপাধ্যায় জানান, পুরসভার বিশেষ নিকাশি দল দ্রুত জল সরানোর কাজে নেমেছে।
জল ছাড়া হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বনাথ মশান।
প্রস্তুত রয়েছেন দমকল কর্মীরাও। আসানসোল দমকলের ওসি সেলিম জাভেদ জানান, প্রয়োজন হলেই তাঁরা ত্রাণের কাজে নামবেন।
দুর্গাপুরের স্টেশনবাজার ও বেনাচিতি লাগোয়া বেশ কিছু এলাকায় প্রবল বৃষ্টিতে জল দাঁড়ালেও বৃষ্টির রেশ কমতেই তা সরে গিয়েছে। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে হ্যানিম্যান সরণি, মায়াবাজার রেলগেটের আগের রাস্তা আরও বেহাল হয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কৃষি দফতরের মতে, যে সব এলাকা প্লাবিত হয়নি, সেখানে এই বৃষ্টি ধান চাষের উপযোগী হবে। তবে শাক-সব্জির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ক্যানালে অতিরিক্ত জল ছাড়া হলে পাশের চাষ জমিগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইতিমধ্যে বরাকর ও দামোদরে জল অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় জল কমিশনের ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার মনোজ কুমার জানান, মাইথন ও পাঞ্চেত বিকেল পর্যন্ত প্রায় দেড় লক্ষ কিউসেক জল জমেছে। আপাতত প্রতি দিনই ওই দুই জলাধার থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন আসানসোলের রেলপাড় এলাকা। নিজস্ব চিত্র।
তবে মাইথন ও পাঞ্চেতের ছাড়া জলে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে বিশেষ সমস্যা হবে না। আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত বলেন, “রানিগঞ্জ এলাকার কিছু নীচু অঞ্চলে জল ঢুকতে পারে। তার জন্য আমরা তৈরি আছি।” যথেষ্ট ত্রাণসামগ্রীও মজুত আছে বলে তিনি জানান। অন্য দিকে, সালানপুর ব্লকের অজয় নদ সংলগ্ন এলাকায় নামোকেশিয়া অঞ্চলের কিছু বস্তিতে জল ঢোকার বলে আশঙ্কা রয়েছে। প্রয়োজনে ওই এলাকায় যেন দ্রুত ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
দামোদরে জল বাড়তে থাকায় নদের আশপাশের অঞ্চলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুর্গাপুর দমকলের ওসি নিতাই চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখানে প্লাবনের তেমন আশঙ্কা নেই। তবু আমরা তৈরি আছি।” দুর্গাপুর পুরসভার জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডি সাহানা বলেন, “বৃষ্টি একনাগাড়ে চললেও আমরা চেষ্টা করছি, আটকে যাওয়া নর্দমার মুখগুলি পরিষ্কার করার। যাতে কোথাও নিকাশি ব্যাহত হয়ে জল না জমে, বৃষ্টি একটু থামলেই সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রবি ও সোমবার রাস্তাঘাট সুনসান থাকলেও এ দিন যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে বাস কম থাকায় সমস্যায় পড়েছেন অনেক যাত্রী। বাস সংগঠনগুলি অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, বৃষ্টিতে যাত্রী কম থাকলেও বিভিন্ন রুটের বাস যাতে চলে সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.