|
|
|
|
ফড়ে-দাপটে বিপাকে পাট চাষিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
সরকারি সহায়ক মূল্য বাড়েনি। সেই সুযোগে শুরুতেই ফড়েদের একাংশের দাপটে বিপাকে পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের পাট চাষিরা। লাভের আশায় এ বছর জেলায় চাষিরা অতিরিক্ত ১১ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করে দামের পরিস্থিতি দেখে মুষড়ে পড়েছেন। চাষিদের অভিযোগ, মূল্য বৃদ্ধির জেরে চাষের খরচ বেড়েছে। অথচ ভারতীয় জুট কর্পোরেশন পাটের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি করেনি। এমনকী বাজারে পাট কিনতে নামেনি। হাটগুলি এখন পুরোপুরি ফড়েদের নিয়ন্ত্রণে। তাঁদের ঠিক করা দামে পাট বিক্রি করে কেউ লাভের মুখ দেখতে পারছে না। সিপিএম প্রভাবিত সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক রঘুনাথ রায় বলেন, “সরকারি তরফে এখনও পাট চাষিদের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে পাট কেনার ব্যবস্থা করতে হবে।” পাট চাষিদের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের কর্তারাও চিন্তিত। দক্ষিণ দিনাজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক নারায়ণ সরকার বলেন, “পাট বিপণন বিষয়ে কি অবস্থা আছে তা জানতে জেসিআই কর্তাদের নিয়ে সভা করা হবে।” কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এ বার ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গত বছর চাষের জমির পরিমান ছিল ১৮ হাজার হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ভল ফলন পেয়ে চাষিরা ভাল দামের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু বাজারে কুইন্টাল প্রতি দাম মিলছে গড়ে ১ হাজার ৯০০ টাকা। যদিও কৃষি কর্তারা জানান, সরকারি সহায়ক মূল্য ধার্য রয়েছে কুইন্টাল প্রতি ১ হাজার ৭০০ টাকা। |
|
ছবি: অমিত মোহান্ত। |
বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জ, কামারপাড়া, পতিরামের মতো বড় হাট ফেরত পাট চাষি জীবন বর্মন, অখিল রায় জানান, কয়েক বছর থেকে পাটের সরকারি সহায়ক মূল্য ১৭০০ টাকা থেকে ১৭৬৬ টাকার মধ্যে রয়েছে। অথচ চাষের খরচ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। চাষিদের দাবি পাটের সরকারি সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ২ হাজার ২০০ টাকা করা না হলে তাঁদের বিপাকে পড়তে হবে। হিলির ত্রিমোহিনী হাটে বলে চাষি হৃদয় বর্মন বলেন, “১ বিঘা জমিতে চাষ করে ২৮০ কেজি পাট মিলছে। ঝাড়াই বাছাইয়ের পরে ২৫০ কেজি পাট বেচে মিলছে গড়ে ৫ হাজার টাকা। অথচ বিঘা প্রতি পাট চাষের খরচ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার টাকা। বিঘাতে মাত্র ১ হাজার টাকা লাভ করে কেমন করে ধারদেনা শোধ করবেন!” ছোট পাট চাষিরা জানান, কয়েক বছর আগেও ১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ৩ হাজার টাকা লাভ হত। মরশুমের শুরুতে পাটের দাম সরকারি সহায়ক মূল্যের চেয়ে কুইন্টাল প্রতি অন্তত ৬ হাজার টাকা বেশি থাকে। কিন্তু এ বার ফঁড়েদের দাপটে দাম উঠছে না। চাষিদের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেননি জেলা কৃষি আধিকারিক লক্ষমীকান্ত মাণ্ডি। তিনি বলেন, “এ বার অতিরিক্ত পাট চাষ হয়েছে। কয়েক দিনে হাটে পাট উঠতে শুরু করলে সহায়ক মূল্যের নীচে যেন দাম না নামে সেদিকে লক্ষ রাখা হবে।” |
|
|
|
|
|