গাড়ি-রিকশায় জটলা হাসপাতালে
শিশু মৃত্যুর তদন্তে এসে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা গাড়ি নিয়ে বহরমপুরের জেলা সদর হাসপাতালের গেট দিয়ে ঢুকতেই পারছিলেন না।
প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এসে ঠিক এই ভাবেই আটকে যান সদর হাসপাতালের সামনে।
প্রশাসনের নাকের ডগাতেই হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ঢোকার মুখটাই আটকে রোজ দাঁড়িয়ে থাকে রোগীর বাড়ির আত্মীয়-পরিজনদের মোটরবাইক, ভাড়ার গাড়ি ও রিকশায়। সদর হাসপাতাল চত্বরে এটাই দস্তুর!
নানা রকম গাড়ির পাশাপাশি হাসপাতালের ঢোকার সামনের রাস্তা দখল করে বেআইনি বিভিন্ন দোকান-ঘরও গড়ে উঠেছে। গোটা বিষয়টি জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক তরফে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলেও অভিযোগ।
হাসপাতাল চত্বরে ‘যানজট’। নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতালের সুপার পার্থ দে বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ইউনিয়ন অফিস হঠিয়ে দিয়ে হাসপাতাল চত্বরে যান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে বেশ কয়েক বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি হাসপাতালের সামনের রাস্তা দখল করে বেশ কিছু বেআইনি দোকান ঘর গড়ে উঠেছে। এতে হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে। দিনের পর দিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।”
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয়কুমার ঘোষ বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা দেখব। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা উচিত। আলোচনায় সমস্যা না মিটলে বেআইনি ঘর ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালে, আমরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব।”
গত ১৬ জুন হাসপাতাল চত্বরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ গ্রহণের কথা জানালেও পরিস্থিতির বদল ঘটেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, হাসপাতাল চত্বরে গাড়ি পার্কিং করে রাখা থেকে মেরামত ও গাড়ি ধোওয়ার কাজও হয়ে থাকে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ অমিয় ঘটক বলেন, “কল বুক পেয়ে জরুরি ভিত্তিতে রোগী দেখতে যাওয়ার সময়ে হাসপাতালে ঢোকার মুখে যানজটে দীর্ঘ দিন আটকা পড়েছি। তখন গাড়ি থেকে নেমে রোগী দেখতে ছুটতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল চত্বরে বেআইনি গাড়ি পার্কিং ও বেআইনি দোকান-ঘর সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের উদ্যোগী ভূমিকা থাকা দরকার।”
সেই সঙ্গে সদর হাসপাতাল ও মাতৃসদন ঢোকার দু-দিকের রাস্তা দখল করে বেশ কিছু চায়ের দোকান থেকে ফলের দোকান রয়েছে। ফলে সংকীর্ণ হয়ে পড়া ওই রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহন ও নিয়ন্ত্রণহীন রিকশার দাপটে যানজট নিত্য দিনের সঙ্গী।
আইএনটিসিইউ-এর জেলা সভাপতি তপন ত্রিপাঠী বলেন, “হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা বা রোগীর অসুবিধা করে কোনও কাজ করা উচিত নয়। তবে হাসপাতালের পরিকাঠামোগত অভাবে রোগীর বাড়ির লোকজনকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকে আমাদের সদস্যরা। সেই সঙ্গে তাঁরা রুজির টানে রোগী নিয়ে গাড়িতে যাতায়াতও করে থাকে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল চত্বর থেকে ট্যাক্সি ইউনিয়ন সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসন আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইলে আমরা সহযোগিতা করব।”
সিটু-র জেলা সম্পাদক তুষার দে বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে প্রশাসন যদি কোনও নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করতে সাহায্য করব।” তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, “রোগী ও রোগীর বাড়ির অসুবিধা করে কোনও কাজ আমাদের সদস্যরা করবে না, এই বিশ্বাস আমার আছে। তবে প্রশাসন আলোচনার মাধ্যমে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আমরা তা মানব।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.