|
|
|
|
শৌচাগার কম, বিপাকে ভক্তেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
উৎসব প্রাঙ্গণ নয়। যেন শৌচাগার। ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দিরকে ঘিরে চলা শ্রাবণী উৎসবের এ পরিণতির অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। দেশ-বিদেশের লক্ষাধিক ভক্তের ভিড় হলেও সেখানে মন্দির চত্বরে রয়েছে ১২টি শৌচাগার। নিরুপায় ভক্তেরা প্রকৃতির টানে বাধ্য হয়ে খুঁজে নিচ্ছেন আশপাশের ফাঁকা এলাকা। পরিষেবার ওই বেহাল দশার কারণে দূষণের মাত্রা বেড়ে চললেও তার দায় মন্দির কমিটি বা প্রশাসন কেউ নিতে রাজি নয়। মন্দির কমিটির হিসেবে গত রবিবার জল্পেশে দেড় লক্ষ ভক্তের ভিড় হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অতি সামান্য মন্দির চত্বরের শৌচাগারের সুবিধা পেয়েছেন। মন্দির সংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ী যোগেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “গত রবিবার রাতে দেখি অসমের একদল মহিলা উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। সন্দেহবশত সমস্যার কথা জানতে চাই। ওঁরা আমার হাত ধরে শৌচাগারের ব্যবস্থা করে দিতে বলে। নিরুপায় হয়ে ওঁদের বাড়িতে নিয়ে যাই।” অচেনা জায়গায় পৌছে অনেকেই উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। বাড়ির রাস্তা নোংরা করছেন। জল্পেশ হাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিনোদ রায় বলেন, “উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের এমন বেহাল দশা হবে কেন?” শুধু শৌচাগার নয়। মন্দির চত্বরের হলঘর এবং হাটের শেডে যে বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে সেখানে বড়জোর আটশোজন বসতে পারবেন। বাকিদের খোলা আকাশের তলায় রাত কাটাতে হচ্ছে। বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, পরিষেবার ওই সমস্যা আজকের নতুন নয়। দীর্ঘ দিনের। মন্দির কমিটি ৫ টাকা দামে টিকিট বিক্রি থেকে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করলেও তা মেটাতে উদ্যোগী হয়নি। সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি জল্পেশ মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব। তিনি বলেন, “মন্দির কর্মীদের বেতন দিতে বছরে প্রয়োজন ১৩ লক্ষ টাকা। শ্রাবণী উৎসবে টিকিট বিক্রি থেকে ৫-৬ লক্ষ টাকা আসে। বাকি টাকা অন্য উৎসব থেকে তুলতে হয়। তাই উন্নয়নে সমস্যা হচ্ছে। তবে শৌচাগার ও বিশ্রামাগার বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।” ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি এ বার শ্রাবণী উৎসবে জল্পেশ মেলা মাঠ ৭০হাজার টাকায় ইজারা দেয়। প্রশ্ন উঠেছে, ইজারা দিয়েই কী দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়! কেন ইজারার টাকা দিয়ে পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দুলালী অধিকারী বলেন, “পরিষেবার বিষয় আমরা দেখি না। সেটা মন্দির কমিটির দেখার কথা। ওরা জানালে নিশ্চয়ই সাহায্য করা হবে।” বিডিও সম্রাট চক্রবর্তীও জল্পেশে দূষণ নিয়ে নালিশ শুনেছেন। তিনি বলেন, “মন্দিরের লাগোয়া এলাকায় ১০টি অস্থায়ী শৌচাগার তৈরির নির্দেশ দিয়েছি।” |
|
|
|
|
|