|
|
|
|
দিনভর বৈঠক দিল্লিতে |
দার্জিলিঙের সংরক্ষিত অরণ্যের অধিকারও চান মোর্চা নেতারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
দার্জিলিঙে যে সংরক্ষিত অরণ্য রয়েছে, তা গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন বা জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-এর অধীনে আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব। পাশাপাশি, দার্জিলিঙে শিল্পায়নের জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মতোই করছাড় এবং আরও কিছু অর্থসাহায্যও চেয়েছেন তাঁরা। গোর্খাদের পরিচয় বিষয়ক ‘বিভ্রান্তি’ এড়াতে আলাদা শংসাপত্রও চাওয়া হয়েছে বলে মোর্চা নেতারা জানান।
দার্জিলিঙের জন্য কেন্দ্রের থেকে বিশেষ সুবিধা আদায় করতে এ দিন প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মোর্চা নেতারা। গত ১৮ জুলাই সুকনায় জিটিএ নিয়ে চুক্তি সইয়ের পর এই প্রথম বিমল গুরুঙ্গ-রোশন গিরিরা দিল্লিতে এলেন। দিল্লির এই সফরে এক দিকে যেমন ত্রিপাক্ষিক চুক্তির জন্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিমলরা, তেমনই পাহাড়ের জন্য আরও কিছু দাবিও জানান।
মোর্চা নেতাদের বক্তব্য, দার্জিলিঙের ৩৮ শতাংশ এলাকায় সংরক্ষিত অরণ্য রয়েছে, যার আয়তন ১,১১৫ বর্গকিলোমিটার। কেন্দ্রের হাত থেকে এই সংরক্ষিত অরণ্যের দায়িত্ব জিটিএ-র হাতে তুলে দেওয়া হোক। মোর্চা সূত্র বলছে, দার্জিলিঙের অর্থনীতি অনেকটাই ওই সংরক্ষিত অরণ্যের উপর নির্ভরশীল। দামি কাঠ তো রয়েছেই, তার সঙ্গে সিঞ্চল, সিংগালিলা, মহানন্দা অভয়ারণ্য এবং নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কও ওই সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে রয়েছে। মোর্চা নেতা রোশন গিরি বলেন, “অসমে যে বড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল রয়েছে, তাদেরও সেখানকার অরণ্যের অধিকার দেওয়া হয়েছে।”
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বা পার্বত্য রাজ্যগুলিতে শিল্পায়নে উৎসাহ দিতে যে ধরনের কর ছাড় দেওয়া হয়, দার্জিলিঙের জন্যও একই ধরনের কর ছাড় বা ভর্তুকির দাবি জানিয়েছেন মোর্চা নেতারা। তাঁদের দাবি, দার্জিলিঙের জন্য কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি তৈরির ঘোষণাও করে দিক কেন্দ্র। জিটিএ-র জন্য প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকা করে আর্থিক সাহায্য দিতে সম্মত হয়েছে কেন্দ্র। আজ অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে মোর্চা নেতারা দাবি করেছেন, পাহাড়ের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির উন্নতিকল্পেও কেন্দ্র অর্থসাহায্য দিক।
মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কাছে গোর্খাদের জন্য একটি শংসাপত্র দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, গোর্খাদের অনেক সময়ই বিদেশি বা নেপালি বলা হয়। এই বিভ্রান্তি দূর করতে পাহাড়ের বাসিন্দাদের পরিচয় সম্পর্কে একটি শংসাপত্র দেওয়া হোক। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক শেষে রোশন গিরি জানান, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সব রকম আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে চুক্তি হয়ে যাওয়ার পরেও কেন্দ্রের কাছে দাবি-দাওয়া জানাতে আসা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে তাঁদের কোনও বিরোধ আছে বলে মানতে রাজি নন বিমল-রোশনরা। তাঁদের যুক্তি, এই বিষয়গুলি কেন্দ্রের আওতাতেই পড়ে। তা ছাড়া, একই বিষয়ে রাজ্যের কাছেও দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। রাজ্য সরকারও বিষয়গুলি কেন্দ্রের কাছেই পাঠিয়ে দিয়েছে। |
|
|
|
|
|