|
|
|
|
পরিসংখ্যান দফতর ঢেলে সাজার উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জেলায় জেলায় রয়েছে ‘ব্যুরো অফ অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক্স অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকস’। তবে এতদিন এগুলি সকলের নজর এড়িয়েই ছিল। এ বার এই বিভাগের খোলনলচে বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের নতুন সরকার। ব্যুরোর জেলাস্তরের অফিসগুলি যাতে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করে, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া ও বীরভূমএই সাতটি জেলায় আপাতত জেলা-প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে ব্যুরো। ৭টি জেলায় অফিসগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে ৩ কোটি ৮ লক্ষ টাকা মঞ্জুরও করেছে সরকার। তথ্য-পরিসংখ্যানের এই দফতর যথাযথ ভাবে কাজ করলে জেলা প্রশাসন উপকৃত হবে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তের বক্তব্য, “ওই বিভাগ থেকে আমরা সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে পারব। এতে প্রশাসনিক কাজে সুবিধা হবে।”
ঠিক কী করে ‘ব্যুরো অফ অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক্স অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকস’? জেলার সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করাই এই বিভাগের কাজ। যেমন কত কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে, তার মধ্যে কতটা কাঁচা, কতটা পাকা, কোন দফতরে কত কর্মী রয়েছে। এ সবের পাশাপাশি মাংসের দাম কত, কোন খাদ্যশস্যের বাজার দর কেমনএ সব তথ্যও ব্যুরো-অফিসগুলিতে থাকার কথা। যাবতীয় তথ্য একটি জায়গায় থাকলে প্রশাসনের পক্ষে কাজ করাও সহজ। এত দিন অবশ্য নামেই ছিল তথ্য-পরিসংখ্যানের এই অফিসগুলি। রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তা নজরে আসে। তথ্য সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করে জানা যায়, সেখানে তেমন কোনও তথ্যই নেই! যেটুকু রয়েছে তার সঙ্গে আবার বাস্তবের বিস্তর ফারাক। এই বিভাগের কর্মীরা নিয়মিত অফিসে আসেন না, বাড়িতে বসেই ফোনে তথ্য সংগ্রহ করে কাজ চালান বলে অভিযোগ। অথচ, ব্যুরোর জন্য জেলাস্তরে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক রয়েছেন। প্রতিটি ব্লকেও দফতরের একজন করে কর্মী থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই নেই।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ব্যুরো-অফিসটি রয়েছে সিপাইবাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে। পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে অফিসটি কালেক্টরেটের মধ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিস্ট্রিক্ট রেজিস্ট্রারের অফিসের পাশের ভবনটি দোতলা করে সেখানেই ওই অফিস চালু হবে। এর ফলে তথ্য-পরিসংখ্যানের এই অফিস থাকবে জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দফতরের কাছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ প্রশাসনের সঙ্গে এতদিন এই বিভাগটির কার্যত কোনও সম্পর্কই ছিল না।
প্রতি বছর জেলার বিভিন্ন পরিসংখ্যান নিয়ে একটি বই প্রকাশ করে প্রশাসনিক কর্তাদের দেওয়া হত। কিন্তু ২০০৯ সালের পরে সেই বইপ্রকাশও আর হয়নি। যদিও অফিসের এই দশা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর দেবাশিস ঘোষ। তাঁর অফিসের কাজ কী, পর্যাপ্ত কর্মী রয়েছে কি নাকোনও কিছুই জানাতে চাননি তিনি। শুধু বলেন, “কিছু জানতে হলে ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলুন।” এই বিভাগকে ঢেলে সাজতে রাজ্যের নতুন সরকারের উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|