গ্রেফতার পাণ্ডা-সহ দুই
আন্তঃরাজ্য ট্রাক ও গাড়ি পাচার চক্রের হদিস
কটি ট্রাক চুরির তদন্তে নেমে আন্তঃরাজ্য ট্রাক ও ছোট গাড়ি পাচার চক্রের হদিস পেল বনগাঁ থানার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোরে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানা এলাকার বাইপাসের ধারের একটি পেট্রল পাম্পের কাছ থেকে পুলিশ মহম্মদ হানিফ খান এবং মহম্মদ তাহের আলি নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে মারিশদা থানা এলাকার সেচ দফতরের পিছন থেকে চুরি যাওয়া একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়। এর আগে, ট্রাক চুরির অভিযোগে ২ জুলাই হাবরা থানা এলাকা থেকে রাজু প্রধান এবং রাকেশ রায় নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা করেই হানিফ এবং তাহেরের খোঁজ পায় পুলিশ। এই দু’জন কাঁথি থানা এলাকারই বাসিন্দা। রাজু এবং রাকেশের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে।
ধৃত মহম্মদ হানিফ খান ও মহম্মদ তাহের আলি।
পুলিশের দাবি, হানিফ ট্রাক ও ছোট গাড়ি পাচার চক্রের অন্যতম পাণ্ডা। সে পাচারকারীদের মধ্যে ‘কালাম ইলিয়াস পার্টি’ নামে পরিচিত। টাকাপয়সা লেনদেন করত তাহের। কলকাতা, পানাগড়, মেদিনীপুর, দুবরাজপুর প্রভৃতি এলাকায় তাদের ডেরা রয়েছে। সেখান থেকে চুরি করা ট্রাক বা গাড়ি তারা মূলত, ওড়িশা, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে পাচার করে। আবার ওই সব রাজ্য থেকে চুরি করা ট্রাক বা গাড়ি বিক্রি করা হয় এ রাজ্যে। কখনও আবার বাংলাদেশেও গাড়ি পাচার করা হয়। জেরায় ধৃতেরা কবুল করেছে, এখনও পর্যন্ত তারা সব মিলিয়ে ৩৩টি গাড়ি চুরি করেছে। ধৃতদের শুক্রবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এসডিপিও (বনগাঁ) বিমলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই চক্রটি কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলি থেকে ট্রাক এবং ছোট গাড়ি চুরি করে ওড়িশা, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে পাচার করছে। ওই চক্রে জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
গত ১ জুলাই ভোরে বনগাঁর ১ নম্বর রেল গেটের কাছের একটি পেট্রল পাম্প চত্বর থেকে তাঁর একটি ট্রাক চুরি যায় বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পাঁচপোতা-কালুপুর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ ঘোষ। তার কয়েক মাস আগে গাইঘাটা থানা এলাকা থেকে একটি ট্রাক চুরি যায়।
উদ্ধার হওয়া সেই ট্রাক।
তদন্তে নেমে পুলিশ ভূপতিনগর থানা এলাকার একটি জায়গা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ট্রাকটি উদ্ধার করে। সেই সময় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলেও ভূপতিনগরে একটি চক্রের হদিস পায়। বিশ্বনাথবাবুর ট্রাক চুরির পরেই ওই চক্রের উপরে প্রাথমিক সন্দেহ হয় পুলিশের। এসডিপিও জানান, তদন্তে জানা যায়, রাকেশ ও রাজু হাবরায় ডেরা বেঁধেছে। তার পরেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা অপরাধের কথা কবুল করে জানায়, ট্রাকটি তারা হানিফ এবং তাহেরের কাছে বিক্রি করে দেয়।
হানিফ ও তাহেরের নাম জানার পরেই তাদের গতিবিধির উপরে নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, রাজু-রাকেশের গ্রেফতারের কথা হানিফ-তাহেররা জানতে পারেনি। সেই কারণে, বৃহস্পতিবার ভোরে রাজু এবং রাকেশকে দিয়ে ওদের ফোন করিয়ে বলানো হয়, একটি নতুন গাড়ি কলকাতা থেকে চুরি করে কাঁথির বাইপাসের ধারের একটি পেট্রল পাম্পের কাছে রাখা আছে। বাইকে চেপে তাহের ও হানিফ সেখানে আসতেই পুলিশ গ্রেফতার করে। মারিশদা থানা এলাকার সেচ দফতরের পিছন থেকে বিশ্বনাথবাবুর চুরি যাওয়া ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে বিশ্বনাথবাবুও ওই এলাকা থেকে একটি ফোন পান বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ট্রাকের গায়ে আমার মোবাইল ফোন নম্বর লেখা রয়েছে। তা দেখে স্থানীয় গ্রামবাসীরাই আমাকে ফোন করে জানান। আমি পুলিশকে তা জানিয়ে দিই।”
পুলিশ জানায়, একটি ট্রাক চুরি করে রাকেশ-রাজুরা পায় ৪০ হাজার টাকা করে। তাহের-হানিফরা পায় ২ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলির পেট্রল পাম্প থেকেই মূলত ট্রাক চুরি করে এই চক্রটি।

ছবি: পার্থসারথি নন্দী
Previous Story Rajya Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.