|
|
|
|
খড়্গপুরে গিয়ে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথপুর |
স্কুল থেকে পালিয়েছিল দুই বান্ধবী। এক জন ফিরে এলেও অন্য জন তিন দিন পরেও না ফেরায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে এলাকায়। অনিতা বাউরি নামে ওই ছাত্রীর সন্ধানে তার বান্ধবী তথা সহপাঠিনী পূজা বাউরিকে নিয়ে খড়্গপুরেও তদন্তে গিয়েছিল রঘুনাথপুর থানার পুলিশ। কিন্তু সেখানে অনিতার খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রঘুনাথপুরের জিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা, বছর তেরোর অনিতা ও নন্দুয়াড়ার বাসিন্দা পূজা বাউরি। দু’জনই রঘুনাথপুর গার্লস হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার তারা স্কুল থেকে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজির পরে রঘুনাথুপর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে দুই ছাত্রীর পরিবার। বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসে পূজা। কিন্তু অনিতা না ফেরায় তার বাড়ির লোকজন প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পুলিশ সূত্রের খবর, পূজা বাড়ি ফিরে আসার পরেই তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তখন পূজা পুলিশকে জানায়, মঙ্গলবার তারা স্কুল থেকে পালিয়ে প্রথমে আদ্রায় যায়। সেখান থেকে ট্রেনে চেপে দু’জনেই গিয়েছিল খড়্গপুরে।
পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় পূজা জানিয়েছে, অনিতাই তাকে খড়্গপুরে নিয়ে যায়। অনিতা বলেছিল খড়্গপুরে তার বন্ধুর বাউরির সঙ্গে দেখা করতে যাবে। ওই ছেলেটির বাড়ি কলকাতায়। কিন্তু রঘুনাথপুরে তার মামাবাড়ি হওয়ার সুবাদেই অনিতার সঙ্গে আলাপ ও বন্ধুত্ব। খড়্গপুরে থেকে সে পড়াশোনা করে। মঙ্গলবার খড়্গপুর স্টেশনে নামার পরে অনিতা ফোন করে ওই ছেলেটিকে সেখানে ডাকে বলেও পুলিশকে জেরায় জানিয়েছে পূজা। অন্য দিকে, মোবাইল ফোনে পূজার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল রাজেশ মাহাতো নামে খড়্গপুরের বাসিন্দা এক যুবকের। পুলিশের দাবি, পূজা জানিয়েছে, অনিতা তার বন্ধুকে ডাকার সময় সে-ও রাজেশকে খড়্গপুর স্টেশনে ডেকে নেয়। স্টেশনের সামনেই তাদের দেখা হয়েছিল। পূজার দাবি, বুধবার সে একাই খড়্গপুর থেকে ট্রেন ধরে আদ্রা হয়ে রঘুনাথপুরে ফেরে। কিন্তু অনিতা সে দিন বাড়ি ফিরতে চায়নি।
আর এই ঘটনার জেরেই তৈরি হয়েছে যাবতীয় সংশয় ও ধোঁয়াশা।
এ দিকে, মিশিরডি গ্রামের বাসিন্দা এক কলেজ ছাত্রী ও পূজাকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ যায় খড়্গপুরে। ওই কলেজ ছাত্রী পূজা ও অনিতার বান্ধবী বলে পুলিশ জানিয়েছে। পূজা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, অনিতা খড়্গপুরে যে ছেলেটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল, তার সম্পকেই এই কলেজ ছাত্রী বেশি জানে। খড়্গপুর পুলিশের সাহায্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় রাজেশ ও তাঁর এক সঙ্গীকে। কিন্তু ওই দুই যুবক অনিতার সম্পর্কে কোনও খোঁজ দিতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, তদন্তের স্বার্থে রাজেশ-সহ ওই দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দুই যুবক, পূজা ও তার কলেজ ছাত্রী বান্ধবীকে নিয়ে রঘুনাথপুর থানায় ফেরে পুলিশ। সেই সময় প্রচুর মানুষ ভিড় করেন থানা চত্বরে। ভিড়ের মধ্যে থাকা মিশিরডি গ্রামের কিছু বাসিন্দা দাবি করেন, তাঁদের গ্রামের ওই কলেজ ছাত্রী এই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাই তাঁকে পুলিশ ছেড়ে দিক।থানায় ওই চার জনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরেও নিখোঁজ স্কুলছাত্রী সম্পর্কে পুলিশ কোনও তথ্য পায়নি। রঘুনাথপুর থানা সূত্রে জানা যাচ্ছে, পূজার বক্তব্যে কিছু ‘অসঙ্গতি’ মেলায় তাকে ফের জেরা করা হবে। পূজা ও অনিতার পরিবারের লোকেরা এই গোটা ঘটনার ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মুখ খুলতে চাইছেন না পুলিশ কর্তারাও। রঘুনাথপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য শুধু বলেছেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|