২৭ কিলোমিটারের অসহনীয় যন্ত্রণা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যারাকপুর |
রাস্তা আছে। কিন্তু তা চলাচলের অযোগ্য। পিচ উঠে গর্ত বেরিয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার রাস্তায় অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। কোথাও কোথাও আবার জমা জল বের করতে রাস্তা কেটে দেওয়া হয়েছে।
পথের নাম ঘোষপাড়া রোড। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের প্রাচীন এই রাস্তায় প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলে। চলে তিনটি রুটের বাস। গঙ্গার ধার বরাবর এই রাস্তার দু’ধারে কল-কারখানা থাকায় মালবোঝাই ট্রাক ও লরিও চলাচল করে। ঘন জনবসতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া এই রাস্তার দুধারে অসংখ্য দোকান ও বাজার থাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় থাকে। তা ছাড়া কারখানাগুলিতেও শিফ্ট শেষে বা শুরুর সময় ভয়ানক যানজট হয়। এর মধ্যে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো অবস্থা। ঘোষপাড়া রোডের সড়ক যন্ত্রণা এড়াতে এতদিন সমান্তরালে যাওয়া কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতেন গাড়ির চালকেরা। কিন্তু সেই পথের অবস্থাও নারকীয়। তার উপর এক্সপ্রেসওয়ে টোল দিতে হয়। খারাপ রাস্তায় টোল দিতে রাজি হন না চালকেরা। তাই ঘোষপাড়া রোডের উপরে চাপ কমার বদলে বেড়ে গিয়েছে।
|
|
খানাখন্দে ভরা ঘোষপাড়া রোড। ছবি: বিতান ভট্টাচার্য। |
ঘোষপাড়া রোডে সবচেয়ে বেশি যানজট হয় ভাটপাড়ায় এবং নৈহাটি স্টেশনের কাছে। নৈহাটির বিধায়ক তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ঘোষপাড়ার এই রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি থাকে বলে রাস্তার খারাপ অবস্থা। পূর্ত মন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। উনি বিষয়টি দেখছেন।’’ উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরকে বলেছি। অবিলম্বে কাজ শুরু হওয়ার কথা।’’
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ৬ মিটার চওড়া এই রাস্তায় ইছাপুর, শ্যামনগর, জগদ্দল ও নৈহাটিতে বড় বাজার বসায় যান চলাচলে অসুবিধা হয়। রাস্তাটি দু’পাশের জমি থেকে নীচু হওয়ায় বাজার ও রাস্তার দু’পাশের জল এসে রাস্তায় জমে। পূর্ত দফতরের উত্তর কলকাতা ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অসীম রায় বলেন, ‘‘সব জল রাস্তায় এসে জমা হওয়ায় ঘোষপাড়া রোড খারাপ হয়েছে। তার উপর রয়েছে গাড়ির চাপ। পুরসভা এবং সিইএসসি মাঝেমাঝে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে। তারপরে আমাদের সারাতে হয়। কিন্তু এ বার প্রায় গোটা রাস্তাটাই ভেঙে গিয়েছে।’’ অসীমবাবু জানান, ‘‘বর্ষায় রাস্তা সারানোটাও সমস্যার। লাভও হয় না। তাই গর্ত ভর্তি করতে আপাতত ‘ব্রিক সোলিং’ করা হচ্ছে। বর্ষা থামলে তারপরে বিটুমিন দিয়ে রাস্তাটি সারানো হবে।’’ |
|