|
|
|
|
ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে তৃণমূলের ১৪ দফা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাজ্য নেতৃত্ব সন্ত্রাস বন্ধে কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেও জেলাস্তরে এখনও পর্যন্ত তেমন ফল মিলছে না। বিরোধীদের মারধর, জরিমানা করা, জমি দখলের অভিযোগ উঠেই চলেছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কলকাতায় দলের জেলা সভাপতিদের নিয়ে রাজ্যস্তরের বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং জানিয়ে দেন, সন্ত্রাস বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করতেই হবে। তার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরে দলের যাঁরা অনৈতিক কাজে যুক্ত, এমন কয়েক জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও হয়েছে। অভিযোগ এলে অন্যদের বিরুদ্ধেও দল যে কড়া ব্যবস্থাই নেবে, এমনকী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হবে নাশুক্রবার তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির বৈঠকে ফের এক বার তা জানানো হল।
বৈঠকে জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ, জেলা নেতা শ্যাম পাত্র প্রমুখেরা ছিলেন। ১৪ দফা সিদ্ধান্ত হয়েছে এ দিনের বৈঠকে। ২০০৯-এর লোকসভা ভোট পর্যন্তও যারা বাম-শিবিরে ছিলেন, তাঁদের সহজে দলে নেওয়া যাবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ দলে আসতে চেয়ে আবেদন করলে আগে দেখতে হবে, তাঁদের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অত্যাচার-সহ কোনও গুরুতর অভিযোগ আছে কি না। যদি না-থাকে তবে প্রাথমিক ভাবে সেই আবেদনকারীদের বুথ ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দলের কাজে লাগানো হবে। অন্তত এক বছর তাঁদের আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। ভাল কাজ করলে একমাত্র তখনই দলে সরাসরি যুক্ত করার কথা ভাবা যাবে। সে ক্ষেত্রেও ব্লক কমিটির মাধ্যমে জেলা কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। কলেজ, স্কুল এবং সমবায়ের নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার আগেও ব্লক কমিটির মাধ্যমে জেলা কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। জমি-সংক্রান্ত বিবাদে দলের কেউ জড়াতে পারবেন না। জমি-সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর জন্য ৭ থেকে ১১ জনের কমিটি করতে হবে। তাতে স্থানীয় এক জন আইনজীবীকেও রাখতে হবে। সেই কমিটি মানুষের সাহায্যে পরামর্শ দিতে পারবে। কিন্তু নিজেরা হস্তক্ষেপ করবে না। ঝান্ডা নিয়ে জমি দখল, জরিমানা আদায়, হুমকি--এ সব বরদাস্ত করা হবে না। এমনকী কোনও শাখা সংগঠন কোনও কর্মসূচি নিতে গেলেও ব্লক কমিটির মাধ্যমে জেলা কমিটির কাছে অনুমতি নেবে। এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোথাও কোনও উপদলীয় কার্যকলাপও বরদাস্ত করা হবে না। প্রতিটি ব্লকে পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করা হবে। জেলা কমিটির দু’জন সদস্যকে এক একটি ব্লকের পর্যবেক্ষক করা হবে। তাঁরাই দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করবেন। দলীয় সিদ্ধান্ত কেউ না-মানলে তাঁর বিরুদ্ধে রিপোর্ট সংগ্রহ করার পর রাজ্য কমিটির কাছে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাবে জেলা কমিটি। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ে তোলার উপরে জোর দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দীনেনবাবু স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই শান্তি ও উন্নয়নের কথা বলে আসছেন। সে কথাটাই সবাইকেমনে করিয়ে দেওয়া হল। আশা করি, দলীয় নেতা-কর্মীরা এ বার সতর্ক হবেন। দলের কাজ চালাতে সব রকম সাহায্য করবেন। তার পরেও কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙলে ব্যবস্থা নিতেই হবে।” |
|
|
|
|
|