এক সময়ে আবাসন চত্বরের একটিই গেটে থাকত নিরাপত্তা রক্ষী। এখন গোটা আবাসন চত্বরের দেওয়াল ভেঙেই তৈরি হয়েছে বহু পথ। অভিযোগ, এই সব পথ ধরেই বহিরাগত অবাঞ্ছিত মানুষদের অবারিত আনাগোনা। অভিযোগ, উল্টোডাঙা বিধান আবাসনের ঘটনার পরেও হুঁশ ফেরেনি কর্তৃপক্ষের।
সরকারি কর্মীদের এক চিলতে থাকার জায়গা। পাশ ঘুরতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। অনেক ঘরে ছাদের চাঙড় খসে পড়ছে। জঞ্জাল নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। জল পানের অযোগ্য।
|
এমনই নানা সমস্যায় জর্জরিত তারাতলার ওডিআরসি সরকারি আবাসন। বেহালার প্রবেশদ্বার তথা ডায়মন্ড হারবার রোডের ধারে এই সরকারি আবাসনের নাম ওল্ড ডগ রেস কোর্স বা ওডিআরসি। ১৯৬৫ সালে তৈরি হয় আবাসনটি। বসবাস আরম্ভ হয় ১৯৬৮-তে। সরকারি কর্মীদের থাকার জন্য ৭৫০টির মতো ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়। ভাড়া, এলআইজি ও পুলিশকর্মীদের জন্য তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় গোটা আবাসনকে। পরে ঠিক হয়, এলআইজি ফ্ল্যাটগুলির মালিকানা বিক্রি করে দেওয়া হবে।
একদা এই আবাসনে বসবাসের সব পরিকাঠামোই ছিল। ছিল শিশুদের জন্য খেলার মাঠ, পার্ক। কিন্তু দীর্ঘ দিন এ সবের রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। খেলার সরঞ্জাম সব উধাও।
আবাসন চত্বরে ছিল একটি পণ্যবীথিকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা জিনিস পাওয়া যেত সেখানে। এখন তা বন্ধ। পোড়োবাড়ির চেহারা নেওয়া বাড়িতে ভবঘুরে মানুষদের আস্তানা। নিরাপত্তারক্ষীদের ঘর দখল করে হয়েছে দোকান। তার উপর সকাল থেকে রাত এই আবাসন চত্বরই ট্যাক্সি বা রিকশাচালকদের গাড়ি রাখার জায়গা।
এখানকার বাসিন্দা অরূপ দে বলেন, “সমস্যা অনেক, সবচেয়ে বড় সমস্যা নিরাপত্তার। অবাঞ্ছিত লোকেদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি আমাদের আবাসনে।” |
পুলিশকর্মী আবাসনের গৃহবধূ শেফালি গায়েন বলেন, “কয়েক দিন আগেই চাঙড় খসে পড়ছিল মাথায়। কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছি।” ওডিআরসি আবাসিক কল্যাণ ও সাংস্কৃতিক কমিটির সহকারী সম্পাদক মালবিকা গোস্বামী বলেন, “কোনও নিরাপত্তাই নেই আমাদের আবাসনে। নেই রক্ষণাবেক্ষণের সুব্যবস্থাও। জলের ট্যাঙ্কও ফাটা। বৃষ্টিতে ছাদ চুঁয়ে জল পড়ে বহু ফ্ল্যাটে। বহু ফ্ল্যাট তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে, বণ্টন হয়নি। অনেক সমস্যা। আমরা পুরসভার জল চাই। আবেদনও করেছি। নিরাপত্তার কথাও আবাসন দফতরে জানিয়েছি। দেখি কী হয়।”
আবাসন দফতরের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি একে একে সব ক’টি আবাসন সম্পর্কেই খোঁজখবর নিচ্ছি। বেহালার ওডিআরসি-র সম্পর্কেও যখন জানলাম, তখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেব।” |