|
|
|
|
পাচার হয়ে যাওয়া দুই তরুণীর খোঁজ মিলল বেঙ্গালুরুতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চণ্ডীতলা |
বেঙ্গালুরুতে নারী-পাচার চক্রের হাতে বিক্রি হয়ে যাওয়া হুগলির চণ্ডীতলার দুই তরুণীকে উদ্ধার করে আনল পুলিশ। কাজের লোভ দেখিয়ে চণ্ডীতলারই দুই মহিলা হতদরিদ্র পরিবারের ওই দুই তরুণীকে সেখানে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ। সেখানে তাঁদের যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে বাধ্য করা হত বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম অঞ্জনা বিবি (দত্ত) এবং বাসন্তী বড়াল। উদ্ধার হওয়া তরুণীদের শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই তরুণীদের বাড়ি চণ্ডীতলার নৈটি মনসাতলায়। তাঁদের এক জনের বয়স ২০, অন্য জনের ২৫। দু’জনেই স্বামীবিচ্ছিন্না। গত ৮ জুলাই দু’জনে নিখোঁজ হয়ে যান। এর পরে এক তরুণীর বাড়ির লোকজন চণ্ডীতলা থানায় নিখোঁজ-সংক্রান্ত ডায়েরি করে। তদন্তে নেমে চণ্ডীতলা থানার ওসি সুখময় চক্রবর্তী বাসন্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
বাসন্তী জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে পুলিশকে জানায়, বেঙ্গালুরুতে আচার তৈরির একটি কারখানায় ওই দুই তরুণীকে তিনি কাজে পাঠিয়েছেন। অঞ্জনার মাধ্যমে সেখানে যোগাযোগ হয় বলে তিনি জানান। ইতিমধ্যেই নিখোঁজ এক তরুণীর মা ঝর্না বাগ থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। বাসন্তীকে পুলিশ ধরতেই অঞ্জনা গা-ঢাকা দেন। এতে পুলিশের সন্দেহ দৃঢ় হয়।
শেষমেশ শ্রীরামপুর থেকে অঞ্জনাকেও গ্রেফতার করা হয়। গত ২৫ তারিখ ধৃত দু’জনকে শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত দু’জনকেই পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
জেরায় মুখে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের কাছে অঞ্জনা স্বীকার করেন, বেঙ্গালুরুতে আলাউদ্দিন নামে নারী-পাচার চক্রের জনৈক দালালের কাছে ওই দুই তরুণীকে বিক্রি করা হয়েছে। এ জন্য তাঁরা ১০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। এর পরেই চণ্ডীতলা থানার পুলিশের একটি দল ধৃত অঞ্জনা এবং বাসন্তীকে নিয়ে বেঙ্গালুরু রওনা হয়। সেখানকার কামাখ্যা পার্লে থানার পুলিশের সাহায্যে বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয় চণ্ডীতলা থানার পুলিশকর্মীদের ওই দলটি।
শেষ পর্যন্ত, ওই এলাকারই একটি ঘর থেকে ওই দুই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দলবল-সহ আলাউদ্দিন পালিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, তাদের খোঁজ চলছে। পুলিশের কাছে দুই তরুণী জানান, একটি ঘরে তাঁদের আটকে রাখা হত। বোরখা পরিয়ে এবং মুখ বেঁধে অটোরিকশায় চাপিয়ে হোটেলের ঘরে নিয়ে যাওয়া হত দুষ্কৃতীদের পাহারায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁদের উপরে পাশবিক অত্যাচার চলত। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানান, মূলত বছর তেইশের অঞ্জনার মাধ্যমেই নারী-পাচার চক্রের পাণ্ডাদের হাতে চলে যায় দুই তরুণী। অঞ্জনা আগে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। সেখানে বারে নাচ করতেন। সেই সময়েই ওই চক্রের পাণ্ডাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়েছিল। |
|
|
|
|
|