শেষ পর্যন্ত নিউ টাউনের হিডকো উপনগরী এলাকায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী বা ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড’ (এনএসজি)-এর আঞ্চলিক কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব চূড়ান্ত হতে চলেছে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব আনন্দগোপাল ঘোষ শুক্রবার মহাকরণে এই খবর জানিয়েছেন।
এনএসজি-র আঞ্চলিক কেন্দ্র তৈরির জন্য হিডকো এলাকায় ৩৫ একর জমি পাওয়া যাবে। নিরাপত্তা বাহিনীকে ওই জমি কিনতে হবে। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, জমির দাম একর প্রতি ৫ কোটি টাকা ঠিক হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩৫ একর জমির দাম পড়বে ১৭৫ কোটি টাকা। আনন্দগোপালবাবু বলেন, “আঞ্চলিক কেন্দ্রের জন্য হিডকোর জমিই চূড়ান্ত হতে চলেছে।”
২০০৮-এর ২৬ নভেম্বর মুম্বই বিস্ফোরণের পরে দেশের চার প্রান্তে এনএসজি-র চারটি কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ঠিক হয়, হরিয়ানার মানেসরের ধাঁচে মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ ও পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রগুলি তৈরির জন্য যাবতীয় অর্থ ব্যয় করবে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই পশ্চিমবঙ্গে এসে জমি দেখার কাজ শুরু করেন এনএসজি কর্তৃপক্ষ। আঞ্চলিক কেন্দ্র তৈরির জন্য গোড়ায় ৬০০ একর জমির খোঁজ শুরু করেন তাঁরা। প্রথমে পানাগড়, তার পর একে একে ব্যারাকপুর, কল্যাণী-কাঁচড়াপাড়া ও ডানকুনিতে জমি দেখেন তাঁরা। সরকারের ওই মুখপাত্র জানান, কোথাও বড় রাস্তা ও বিমানবন্দর থেকে বেশি দূরত্ব, কোথাও জমি পছন্দ না হওয়া, কোথাও আবার জমির দাম নিয়ে মতপার্থক্য তৈরি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কোনওটাই চূড়ান্ত করা যায়নি।
এক লপ্তে ৬০০ একর জমি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে দেখে এ বার ৩০০ একর জমিতে কেন্দ্র করতে চেয়ে রাজারহাটের কাছে জগদীশপুরে জমি দেখেন এনএসজি-কর্তারা। সরকার সেখানে জমি অধিগ্রহণ করতে গেলে স্থানীয় মানুষ জমি দিতে অস্বীকার করেন। ফলে এখানেও কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এ বার আঞ্চলিক কেন্দ্রের আয়তন ছোট করে ৫০ একর জমির উপর তা করার সিদ্ধান্ত নেয় এনএসজি।
মহাকরণের খবর, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গত মাসের শেষ দিকে ৫০ একর জমি চেয়ে চিঠি দেয় এনএসজি। সেই মতো হিডকো এলাকায় জমির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু উপনগরী এলাকায় এনএসজি কেন্দ্রের উপযোগী ৩৫ একরের বেশি জমি এক লপ্তে পাওয়া যায়নি। এ দিন এনএসজি-র কর্তাদের ডেকে ‘অ্যাকশন এরিয়া-৩’-এর সেই জমির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে জমির দামও। হিডকোর পক্ষ থেকেও রাজ্য সরকারকে এ দিন চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। ঠিক হয়েছে, খুব শীঘ্রই ওই জমি পরিদর্শন করবেন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তারা। |