স্ত্রী, ছেলেকে বঁটিতে জখম করে তেতলা থেকে ‘ঝাঁপ’
স্ত্রী ও ছ’বছরের ছেলেকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে তিনতলার বারান্দা থেকে ‘ঝাঁপ’ দিলেন এক যুবক। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে চিৎপুরের ৬ কৃষ্ণলাল দাস রোডে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিন জনেই আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, শামিমউদ্দিন আহমেদ নামে ওই যুবক মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
পুলিশ জানায়, বাড়ির তিনতলায় স্ত্রী আজমিরা খাতুন, ছেলে আশরফউদ্দিন ও মা সালেহা খাতুনকে নিয়ে থাকতেন শামিমউদ্দিন। বছর চৌত্রিশের ওই যুবক ওই রাতে দেড়টা নাগাদ আচমকা নিজের ঘুমন্ত ছেলেকে বঁটি দিয়ে কোপাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ করেছেন স্ত্রী আজমিরা। পুলিশকে ওই বধূ জানান, ছেলের চিৎকার শুনে স্বামীকে বাধা দিতে গিয়ে বঁটির ঘায়ে আহত হন তিনিও। হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ব্লকে শুয়ে শুক্রবার দুপুরে তিনি বলছিলেন, “ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। ঘরটা অন্ধকার ছিল। বুঝতে পারছিলাম না কী হয়েছে! ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতেই ও আমার মাথায় বঁটি দিয়ে মারতে থাকে।”
মাথা থেকে ঝরঝর করে রক্ত পড়ছিল আজমিরার। ওই অবস্থায় পাশের ঘরে গিয়ে শাশুড়ি ও ভাসুরকে ডেকে তোলেন তিনি। ঘুম চোখে ঘর থেকে বেরিয়েই ভ্রাতৃবধূকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে আঁতকে ওঠেন শামিমউদ্দিনের দাদা সামসুদ্দিন আহমেদ। পেশায় দুধ ব্যবসায়ী ও ট্র্যাভেল এজেন্ট সামসুদ্দিন এ দিন দুুপুরে তাঁদের বাড়িতে বসে বলছিলেন, “আজমিরাকে নিয়ে ওদের ঘরে ঢুকতেই দেখি, বাচ্চাটা খাটের উপরে ছটফট করছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা। ভাইকে কোথাও দেখতে না পেয়ে বারান্দায় যাই। নীচে তাকিয়ে দেখি, ও রাস্তায় পড়ে রয়েছে।”
সঙ্গে সঙ্গে আজমিরা এবং আশরফউদ্দিনকে নিয়ে আরজিকরে যান সামসুদ্দিন। সঙ্কটজনক অবস্থায় শামিমউদ্দিনকে ওই হাসপাতালেই নিয়ে যায় পুলিশ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আশরফের মাথায় গভীর ক্ষত হয়েছে। অনেকগুলি সেলাই পড়েছে।
আজমিরারও মাথা ও দু’হাতে গভীর ক্ষত। অনেকগুলি সেলাই পড়েছে তাঁরও। তিনতলা থেকে নীচে পড়ে শামিমউদ্দিনের ডান পা ভেঙে গিয়েছে। মেরুদণ্ডেও গুরুতর আঘাত লেগেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্ত্রী এবং ছেলের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও শামিমউদ্দিনের অবস্থা সঙ্কটজনক। পুলিশ ও শামিমউদ্দিনের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ বছর ধরে ওই যুবকের মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে। মাঝেমধ্যেই তিনি উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে মারধর করতেন। সামসুদ্দিন বলছিলেন, “রাতের পর রাত ঘুমাতো না ভাই। চেষ্টা করেও ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো যেত না। কাজকর্ম কিছুই করে না। আমিই ওর সংসার চালাই।” রোজকার মতো ওই রাতেও শামিমউদ্দিনকে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন তাঁর স্ত্রী। হাসপাতালে শয্যায় বসে কাঁদতে কাঁদতে আজমিরা বলেন, “ওষুধ খেতে চাইছিল না। চিৎকার করছিল খুব। এর পরে আমি ছেলেকে নিয়ে শুয়ে পড়ি। তার পরেই হঠাৎ এই কাণ্ড।” তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে শামিমউদ্দিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় স্ত্রী ও ছেলেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছে চিৎপুর থানার পুলিশ।
Previous Story Calcutta Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.