স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে জমি দিলেও ছেলের চাকরি না হওয়ায় তালা
কোনও শর্ত ছিল না ঠিকই তবে বছর পাঁচেক আগে রুকুনপুরের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গড়ে তোলার সময়ে মৌখিক প্রতিশ্রুতি ছিল, গ্রামের কেউ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে জমি দিলে অবশ্যই সেখানে চাকরিও বাঁধা। শর্ত দেখে এগিয়ে এসেছিলেন অনেকেই। তবে স্বাস্থ্যকর্তারা অনেক দেখেশুনে নৈমুদ্দিন বিশ্বাসের জমিটিই বেছে নিয়েছিলেন। কথা দিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে ওখানেই নৈশ প্রহরীর কাজ পাবে। কিন্তু বছর পড়িয়ে গেলেও সে প্রতিশ্রুতি ক্রমেই আবছা হয়ে আসতে থাকে। নৈমিদ্দিনের ছেলের চাকরি আর জোটেনি। তাই বছর তিনেক ধরেই এ ব্যাপারে ক্ষোভ, পরে পাল্টা শাসানি শুরু করেন নৈমুদ্দিন।
কিন্তু তাতেও স্বাস্থ্যকর্তারা বিশেষ আমল দেননি। তাঁদের যুক্তি ছিল, শর্ত হয়েছিল কোথায়, কাগজ আছে? রেগেমেগে তাই দিন কয়েক আগে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তিনি। ফলে শুধু রুকুুনপুর নয়, আশপাশের ভবানীপুর, কালীদাসপুর, বিশারদগঞ্জ, প্রতাপপুর-সহ অন্তত গোটা কুড়ি গ্রামে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গ্রামের কারও হাত-পা ভাঙা থেকে প্রসূতিকে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের হরিহরপাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
বন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে হাত বিশেক দূরে এক পড়শির বারান্দাই আপাতত ভরসা। সেখানেই চলেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভব্রত দাস বলেন, ‘‘অস্থায়িভাবেই চলছে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আলোচনাও চলেছে। দ্রুত সমাধানের।”
বছর পাঁচেক আগে, ২০০৬ সালে যখন স্থানীয় গ্রামবাসীদের অনেক দিনেক স্বপ্নপূরণের মতো গড়ে উঠেছিল রুকুনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র তখন পঞ্চায়েতর দখল ছিল এসইউসি-সিপিএমের হাতে। সেই সময়ে প্রধান ছিলেন এসইউসি’র সফিয়া বিবি। প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা না-রাখার কারণ জানাতে গিয়ে সফিয়া বলেন, “আমরা তো নৈমুদ্দিনের ছেলেকে চাকরি দিতামই। কিন্তু দু বছর পরে তো পঞ্চায়েতই পাল্টে গেল। নতুন প্রধান হলেন সিপিএমের নীলিমা মণ্ডল। তিনি আর প্রতিশ্রুতি রাখলেন কই?” কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখতে সফিয়া বিবিই বা দু বছর সময় নিলেন কেন? তার কোনও সদুত্তোর মেলেনি। আর নীলিমাদেবীর সাফাই, “সরকারি ব্যাপার তো একটু সময় লাগে। উনি তাড়াহুড়ো করলেন। ক্ষোভ দেখিয়ে হাসপাতালটাই বন্ধ করে দিলেন” কিন্তু পাঁচ-পাঁচটা বছরেও যিনি হাজার দশেক মানুষের স্বার্থে জমি দিয়ে সামান্য নৈশ প্রহরীর চাকরি পাননি তাঁর ক্ষোভের কারণ নেই?
নৈমুদ্দিন বলেন, “কোনওরকমে সামান্য জমিতো যা আয় হয় তাতেই চলে। তবুও গ্রামের মানুষের উপকারের জন্য এগিয়ে এসেছিলাম জমি দিতে। একটাও পয়সা নিইনি। বলা হয়েছিল হাসপাতাল চালু হলেই ছেলেকে নৈশ প্রহরী হিসেবে সেখানে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু পঞ্চায়েত বদলে গেলেও সে ব্যাপারে আগ্রহই দেখাল না দুই প্রধানের কেউই। উল্টে পাল্টা আমাকে শাসান হল।”
বাধ্য হয়েই তাই কিছু দিন আগে নিজেই তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.