রাস্তার পাশে ফুটপাথ বলে কিছু নেই। রাস্তার ধার ঘেঁষেই সার দিয়ে গুমটি। তার মধ্যে যেটুকু ফাঁক রয়েছে তা দখল করতে প্রতিযোগিতায় অনেকে। কোথাও ঠেলাগাড়িতে পসরা সাজিয়ে ফেরিওয়ালা। কোথাও দরকষাকষি চলছে রিক্সাচালক-সওয়ারির। আর প্রায় সারা রাস্তার পাশ জুড়েই পার্ক করা রয়েছে মোটরবাইক, চারচাকার গাড়ি। আর এই যানজটের প্যাঁচে পড়ে নাভিশ্বাস অ্যাম্বুল্যান্সেরও। বারবার হর্ন বাজালেও পথ নেই এগোবার।
প্রতিটি কাজের দিনেই এই ছবি দেখা যায় পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড মোড়, হাসপাতাল মোড়, ট্যাক্সিস্ট্যান্ড মোড়, হাটতলা মোড়, কোর্ট মোড়, অলঙ্গিডাঙা মোড়, কাপড়গলি মোড়-সহ বিভিন্ন মোড়ে। পুলিশের উদ্যোগে বেশ কিছু জায়গায় ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা হয়। তবে তাতেও অবস্থার বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি। ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশকর্মীর কথায়, “ওসব কেউ মানেই না। সিগন্যাল লাল থাকলেও ঢুকে পড়ে। যে গুটিকয়েক মানুষ সিগন্যাল মানেন এতে অসুবিধা হয় তাঁদেরও।’’ |
বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ উদযাপন, বা তাদের পথে নামিয়ে পথচারীদের সচেতন করার উদ্যোগ, নাগরিক কমিটির সভাকাজ হয়নি কিছুতেই। বরং দিনে আরও শক্ত হয়েছে যানজটের ফাঁস। স্থানীয় বাসিন্দা সমর চট্টোপাধ্যায় ও জগন্নাথ কিশোর কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ানের ক্ষোভ, “অবস্থা এতটাই খারাপ যে পথচারিরাই ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন।” এই অবস্থার হাল ফেরাতে তিতিবিরক্ত নাগরিকেরা শহরের বাসিন্দা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো’র দ্বারস্থ হন। অবশেষে, ট্রাফিক ব্যবস্থার হাল ফেরাতে সোমবার থেকে পথে নামল পুলিশ। সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সি সুধাকর, ডিএসপি (সদর) অংশুমান সাহা, ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশাসন) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া সদর ও মফস্সল দুই থানার অফিসার দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়গুরু মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী শহরের বিভিন্ন মোড়ে নেমে পড়েন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। জনগণ যাতে সিগন্যাল মেনে চলেন তার জন্য আমরা মোড়ে মোড়ে পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করেছি।” তিনি জানান, অভিযান চলবে। প্রথমে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করা হবে। পরে তা না মানলে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |