|
|
|
|
সুশীলই অর্থমন্ত্রীদের কমিটির দায়িত্বে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
চালটা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। নিজেদের লাভ-ক্ষতি নিয়ে অনেক হিসেবে কষে শেষ পর্যন্ত তা মেনেও নিল বিজেপি। প্রণববাবুর প্রস্তাব অনুযায়ীই অর্থমন্ত্রীদের ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’-র চেয়ারম্যানের পদটি আজ গ্রহণ করলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী সুশীল মোদী।
রাজ্যে পালাবদলের আগে অসীম দাশগুপ্ত ছিলেন এই কমিটির শীর্ষে। বর্তমানে এই কমিটির আশু লক্ষ্য পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করা। অথচ ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, গুজরাতের মতো এনডিএ-শাসিত বিভিন্ন রাজ্য এর বিরোধী। সে কারণেই জিএসটি নিয়ে ঐকমত্য তৈরির পথ সুগম করতে বিজেপি-র প্রবীণ নেতা মোদীকে ওই কমিটির দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রণববাবু। সুশীল প্রথমে রাজি হয়ে গিয়েও পরে আবার ভেবে দেখার কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত ইউপিএ-বহির্ভূত দল শাসিত রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের ‘বিমাতৃসুলভ আচরণ’ তুলে ধরতেই বিজেপি এই পদ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিল। ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’-র বৈঠকে আজ সুশীল মোদীর নাম প্রস্তাব করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। সর্বসম্মতিক্রমেই নির্বাচিত হন তিনি। যদিও এর ফলে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হল। |
সুশীল মোদী নিজেও আজ সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “শুধু ঐকমত্য তৈরি করা আমার কাজ নয়। বিজেপি নীতিগত ভাবে জিএসটি-র বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু জিএসটি-র বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের উদ্বেগ রয়েছে। আমার কাজ হবে, এই সব উদ্বেগ নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের সেতুবন্ধন করা।”
এ অবস্থায় আগামী এপ্রিলে কি নতুন কর ব্যবস্থা চালু করা যাবে? সুশীল মোদীর উত্তর, “সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব। বল এখন সংসদের কোর্টে। জিএসটি চালু করার জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল লোকসভায় পেশ হয়েছে, তা এখন অর্থ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটিতে।” তাৎপর্যপূর্ণ হল, সেই স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আবার বিজেপি-রই নেতা যশবন্ত সিন্হা। এখনও কমিটিতে ওই বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি। এমপাওয়ার্ড কমিটির বৈঠকে আজ মূল বিষয় ছিল চেয়ারম্যান নির্বাচন। কিন্তু এ দিনই রাজ্যগুলি নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়ের মতো কয়লা উৎপাদনকারী রাজ্যগুলি চাইছে, কয়লাকে জিএসটির বাইরে রাখা হোক। সিংহভাগ রাজ্য সেস বসানোর অধিকার নিজেদের হাতে রাখতে চায়। জিএসটি চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার জন্য রাজ্যগুলির যে রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, তার ক্ষতিপূরণ কী ভাবে হবে, তা নিয়েও রাজ্যগুলি উদ্বেগ জানিয়েছে। চলতি আর্থিক বছরে কী হবে, তা দূরে থাক, গত বছরের ক্ষতিপূরণের প্যাকেজই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই অবস্থায় য় আগামী বছরের ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু করা যে কার্যত অসম্ভব, তা আজ সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীই মেনে নিয়েছেন।
এত দিন ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’-র চেয়ারম্যান হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছিলেন, আজকের বৈঠকে আজ সকলেই তার প্রশংসা করেছেন। আর রাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে এগোলে সব সমস্যারই সমাধান সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করেন। |
|
|
|
|
|