|
|
|
|
জেরায় জানাল ওরাং |
রঙ্গিয়া বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হয়েছে সেনা-গোলার মশলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
রঙ্গিয়ায় রেল লাইনে বিস্ফোরণের কাজে ব্যবহৃত বিস্ফোরক এসেছিল সেনাবাহিনীর গোলা থেকেই! পুলিশের জেরায় এমনটাই জানাল আদিবাসী পিপল্স আর্মির সেনাধ্যক্ষ সিলভা ওরাং ওরফে সিলভেস্টার তিরকি। তবে সেনাবাহিনী এই ঘটনার দায় নিতে নারাজ।
১০ জুলাই গুয়াহাটি-পুরী এক্সপ্রেসের এস-১ কামরার নীচে বিস্ফোরণ হয়। ৪টি কামরা ছিটকে পড়ে জলে। জখম হন প্রায় ৮০ জন। পরের দিন ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদিবাসী পিপল্স আর্মি (আপা)। তদন্ত চালিয়ে বিস্ফোরণের প্রধান অভিযুক্ত সিলভাকে ১৫ জুলাই রাতে বাক্সার বাগানপাড়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় সিলভা জানিয়েছে: বাক্সার তামুলপুরে সেনাবাহিনীর গোলা ছোঁড়ার চাঁদমারি থেকেই বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে ঘটনার পিছনে সেনাবাহিনীর অন্তর্ঘাত নেই। রয়েছে অসাবধানতা। পুলিশ জানায়, চাঁদমারিতে গোলা ছোঁড়ার পরে ফাটা ও না ফাটা গোলা সংগ্রহ করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তারপর শেলগুলির লোহা বিক্রি করা হয়। না ফাটা গোলার মশলা চলে যায় জঙ্গিদের হাতে। তিন মাস আগে উদালগুড়িতে মালবাহী ট্রেনের লাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মহড়া দিয়েছিল আপা। সেক্ষেত্রেও এই ভাবেই বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় আপা-র সদস্য, ফ্রান্সিস মুর্মুকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর, এনডিএফবি যে বিস্ফোরণ ঘটায় সে ক্ষেত্রেও সেনা চাঁদমারি থেকেই কিছু বিস্ফোরক যোগাড় করেছিল জঙ্গিরা। সিবিআই রিপোর্টে সেই ইঙ্গিত রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তারপরেও কেন সেনাবাহিনী সাবধান হয়নি?
সেনাবাহিনী অবশ্য ঘটনার দায় নিতে নারাজ।
তাদের বক্তব্য, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের অসাবধানতার ফলেই কামানের গোলাগুলি গ্রামবাসীদের হাতে পৌঁছচ্ছে। ৪ কোরের জনসংযোগ আধিকারিক কর্নেল এন এন যোশী বলেন, “সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসনের যৌথ দায়িত্বে থাকে চাঁদমারি। অনুশীলনের আগে আলাদা আলাদা ভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশ উভয়েই, আম-জনতাকে সাবধান করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। অনুশীলনের পরে ক’টি গোলা ছোঁড়া হল, ক’টি নিশানায় লাগল, ক’টি ফাটল এবং ক’টি ফাটেনি--সব হিসাব রাখা হয়।” না-ফাটা গোলা সেনা ও পুলিশ উভয়েই সন্ধান চালিয়ে সংগ্রহ করে। অন্তত সেটাই নিয়ম। ততক্ষণ গ্রামবাসীদের সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ।
যোশীর কথায়, “জেলা প্রশাসন ও পুলিশ ‘অল ক্লিয়ার’ ঘোষণা করার পরেই আমরা ফিরে আসি।” তবে যোশী এও বলেন, “না ফাটা বা ফাটা গোলা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মাঝেমধ্যে দূরে গিয়েও পড়ে। গ্রামবাসীদের পক্ষে সে গুলি কুড়িয়ে পাওয়া কোনও নতুন ঘটনা নয়।” না ফাটা গোলা ভাঙতে গিয়ে সম্প্রতি বাক্সায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। উল্টে সেনাবাহিনীর তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে: বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরক গোলা থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে তার নির্দিষ্ট প্রমাণ কই? আর তেমনটা ঘটে থাকলে, স্থানীয় প্রশাসন গোলা সংগ্রহ আটকাবার ব্যবস্থা নেয় না কেন? |
|
|
|
|
|