|
|
|
|
সরকারি বাসে মহিলা আসনে চলছে পুরুষ-রাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
আসন দখল করে তাস খেলা বা মহিলা কামরায় নির্দ্বিধায় সওয়ার হয়ে জুলুমবাজি গা সওয়া হয়ে গিয়েছে লোকাল ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের। এ বার অফিসের ব্যস্ত সময়ে সরকারি বাসেও প্রায় একই রকম অভিজ্ঞতা হজম করতে হচ্ছে মহিলা যাত্রীদের।
৯এ, এস৯, এস৪, ৩এ-র মতো শহরের বিভিন্ন রুটের সরকারি বাসে অফিসের সময়ে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট আসন দখল করে সরকারি নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন এক শ্রেণির যাত্রী। প্রতিবাদ করতে গেলে গালিগালাজ এবং হুমকি শুনতে হচ্ছে মহিলাদের। জুলুমকারীদের বক্তব্য, অফিসের ব্যস্ত সময়ে মহিলা চিহ্নিত আসন রাখা চলবে না। ওই সময়ে মহিলা আসনেও বসবেন তাঁরাই। দাঁড়িয়ে থাকতে হবে মহিলাদের।
কী ভাবে জোরজুলুম চালাচ্ছেন ওই যাত্রীরা? শনিবার সকাল সাড়ে ন’টার ৯এ বাসে (নম্বর ডব্লিউবিও৪সি ১৮০৯) উঠেই তার নমুনা দেখা গেল। ডানলপ থেকে বালিগঞ্জ যায় ৯এ। সাড়ে ন’টায় ডানলপ থেকে উঠলেন এক দল পুরুষ। মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট সব ক’টি আসন দখল করে বসলেন তাঁরা। শুরু হল খোশগল্প, হাসি। যে ক’জন মহিলা উঠলেন, তাঁদের কাউকেই বসতে দিলেন না। মহিলা-চিহ্নিত আসনে বসার দাবি জানিয়েছিলেন যে সব মহিলা, তাঁদের বলা হল, “মহিলা লেখা থাকলেই বসতে হবে? মামার বাড়ি? সাড়ে ন’টার ৯এ-তে ও সব সরকারি নিয়ম চলে না। এখানে আমাদের নিয়ম চলে।” এই বলেই অবশ্য থেমে থাকেননি তাঁরা। কোনও মহিলা প্রতিবাদ করলে সমস্বরে তাঁকে অপমানজনক কথা বলেছেন, মোবাইল ছুড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। কোনও মেয়ে জোর করে বসতে চাইলে, তাঁকে হাত ধরে টেনে সরিয়েও দিয়েছেন।
বাসের কন্ডাক্টর ও ড্রাইভার তাঁদের অভব্যতা দেখেও কোনও প্রতিবাদ করছেন না কেন? এ ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য, “ওঁরা রোজই এ রকম করে। এক সঙ্গে অনেকে থাকে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের মারধর করবে। আমাদের কিছু করার নেই।” এস৯, এস৪, ৩এ রুটের কিছু বাসে আবার আসনে লেখা ‘মহিলা’ শব্দটি খুঁটে তুলে দেওয়া হয়েছে। তার পরে বলা হচ্ছে, “সিটে কোথায় মহিলা লেখা আছে? ”
এ ব্যাপারে সিএসটিসি-র অপারেশনস ম্যানেজার দুলাল গুপ্ত-র বক্তব্য, “এ রকম কিছু ঘটলে ডিপো ম্যানেজার বা সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক অফিসারের লগবুকে অভিযোগ লেখাতে হবে। তা না করা হলে কিছু করার নেই।” খোদ পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সি-ও বলেন, “বাসে এ রকম হচ্ছে তো, আমরা এখানে বসে কী করতে পারি? কন্ডাক্টর-ড্রাইভার দেখবে। তা না-হলে মেয়েরা লিখিত অভিযোগ জানান, তার পর দেখা যাবে।” |
|
|
|
|
|