|
|
|
|
সুরেন্দ্রনাথ কলেজ |
কর্মী-আবাসনেই পাওয়া গেল গুলি ভরা রিভলভার, কার্তুজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুষ্কৃতীরা যে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে বেছে নিচ্ছে, তার প্রমাণ মিলল আরও এক বার।
গত সপ্তাহেই ভর্তির কাউন্সেলিংয়ের সময়ে হাওড়ার নরসিংহ দত্ত কলেজের ক্যান্টিন থেকে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আর সোমবার কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কর্মী-আবাসন থেকে উদ্ধার হল গুলি-ভর্তি ছ’ঘরার দেশি রিভলভার এবং সাত রাউন্ড কার্তুজ। কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতে বিভিন্ন সময়ে নানা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু নির্বাচনের সময়েই হোক বা ভর্তির সময়ে, নানা ভাবে দুষ্কৃতীরা যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ছে, তার প্রমাণ মিলছে বারবার।
পুলিশ জানিয়েছে, যে ঘর থেকে সোমবার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সেখানে আগে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ক্যাশ বিভাগের কর্মী রাজু দে সপরিবার থাকতেন। তাঁর বাড়ি সোনারপুরে। মাসখানেক আগে রাজুবাবুর বিরুদ্ধে কলেজের তহবিল তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। কলেজের অধ্যক্ষ চিন্ময়শেখর সরকার রাজুবাবুর বিরুদ্ধে মুচিপাড়া থানায় তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেন। কলেজ আবাসনের ঘরটিও ছেড়ে দিতে বলা হয় তাঁকে। এর পরেই ঘরে তালা দিয়ে রাজুবাবু পরিবার নিয়ে চলে যান। কলেজেও আসতেন না তিনি।
এর পরে রাজুবাবুর ঝোলানো তালার উপরে কলেজ-কর্তৃপক্ষ আর একটি তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
চিন্ময়শেখরবাবু জানান, দিন কয়েক আগে রাজুবাবুর সোনারপুরের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ১৮ জুলাই আবাসনের ঘরে থাকা জিনিসপত্র বার করে নিয়ে যেতে। চিঠি পেয়ে সোমবার রাজুবাবুর বাড়ির লোকজন জিনিসপত্র নিতে আসেন। কলেজের নবগঠিত উন্নয়ন কমিটির সদস্যেরা রাজুবাবুর বাড়ির লোকের সামনেই ঘর খোলেন। খাটের তলায় কাগজের একটি ফাইলের মধ্যে রিভলভার এবং কার্তুজগুলি পাওয়া যায়। চিন্ময়শেখরবাবু বলেন, “রাজুর ঘরে কোনও দুষ্কৃতী আশ্রয় নিত কি না, জানি না। কী করে কলেজের ভিতরে অস্ত্র ঢুকল, তা পুলিশকেই তদন্ত করতে অনুরোধ করেছি।” উদ্ধার হওয়া রিভলভারটি রাজুবাবুর, না কি তাঁর বাড়িতে আসত এমন কারও, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুরেন্দ্রনাথে ছাত্রদের গোলমাল প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে সেখানকার কর্মী-আবাসন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র মেলায় ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক থেকে কর্মীরা বিস্মিত সকলেই। রাজুবাবুই ওই অস্ত্র রেখেছিলেন কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, তাঁকে থাকতে নিষেধ করার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ আবাসনটি তল্লাশি করে দেখে নেননি বলে কলেজ সূত্রে খবর মিলেছে। কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে কমিটির কোনও সদস্য অস্ত্র ঢুকিয়েছেন কি না, তা-ও তদন্ত দেখছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, রিভলভারে গুলি ভরা ছিল। অর্থাৎ, যে বা যারা ওই আগ্নেয়াস্ত্র সেখানে রেখেছিল, তারা সেটি ব্যবহার করত। |
|
|
|
|
|