দেশের সব ক’টি রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার মোট লোকসান ছুঁল ৭৫ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যেরবিদ্যুৎমন্ত্রীদের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী সুশীল শিন্ডে গত আর্থিক বছরের জন্য এই তথ্য দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আর কোনও ব্যাঙ্ক বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকে ঋণ দেবে কি না, সম্মেলনে সে প্রশ্নও তুলেছেন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তবে এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি কোনও ভর্তুকি ছাড়াই ২০১০-’১১-এ ১০০ কোটি টাকা লাভ করেছে বলে সংস্থার দাবি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের মাথাব্যথার আর একটি কারণ, লোকসান ঠেকাতে বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানিকে দেওয়া সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির ঢালাও ভর্তুকি। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গুজরাতের তিনটি বণ্টন সংস্থা, অন্ধ্র প্রদেশের দু’টি, কর্নাটকের একটি সরকারি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা লাভ করেছে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বার্ষিক ভর্তুকি দিয়েছে ২০,০০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিগুলির রুগ্ণ অবস্থা কাটাতে তাদের সবাইকেই মাসুল বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। তার জন্য গড়ে প্রতি ইউনিটে মাসুল বাড়াতে হবে ১.৩০ টাকা হারে। মাসুল বাড়াতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সংস্থা বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে দরবার করে আসছে। কিন্তু যতটা দরকার, ততটা মাসুল বাড়েনি। তামিলনাড়ুর মতো যে সব রাজ্য বিনা পয়সায় কৃষির জন্য বিদ্যুৎ দিয়ে আসছে এবং গত পাঁচ বছর মাসুলও বাড়ায়নি, তাদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ২০১০-১১ আর্থিক বছরে লোকসানের শীর্ষে রয়েছে তামিলনাড়ু। তাদের লোকসান হয়েছে ৪৪,০০০ কোটি টাকা। রাজস্থানের লোকসান ৪০,০০০ কোটি টাকা। উত্তর প্রদেশের ২৮,০০০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফে সম্মেলনে বলা হয়েছে, সংস্থাগুলির লোকসান বাড়তে থাকলে তার জের পড়বে বিদ্যুৎ শিল্পের সঙ্গে জড়িত অন্য সব শিল্পের উপরেও। কোল ইন্ডিয়াও বাদ যাবে না। তাই কী ভাবে মাসুল বাড়ানো যায়, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থাকে। |