রেশনের চাল কম দেওয়ার অভিযোগে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ গিয়ে অবস্থা সামাল দেয়। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ি থানার জুনিদপুর গ্রামে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রাপ্য ২৪ কেজির বদলে ২৩ কেজি করে চাল দিচ্ছেন রেশন ডিলার। এরই প্রতিবাদে এ দিন সিউড়ি-সাঁইথিয়া সড়কের ইটেগড়িয়া মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। তার জেরে ওই পথে যান চলাচল কিছুক্ষণের জন্য ব্যাহত হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পুলিশ যাওয়ার আগেই বিক্ষোভ ওঠে। যদিও অশান্তির আশঙ্কায় জেলা পুলিশের ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) প্রশান্ত চৌধুরীর নেতৃত্বে বড় পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রশান্তবাবু বলেন, “ওই রেশন ডিলার আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, রেশনের মাল তোলার সময়েই বস্তায় কম চাল থাকছে। সে জন্যই কিছুটা কম চাল দেওয়া হচ্ছিল উপভোক্তাদের। ওই রেশন ডিলারকে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, চাল নেওয়ার সময় পরিমাণে কম থাকলে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। কিন্তু গ্রাহকদের কোনও ভাবেই কম চাল দেওয়া যাবে না।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারপিছু ৩৬ কেজি চাল দেওয়ার কথা রেশন দোকান থেকে। এ দিন আলুন্দা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত জুনিদপুর গ্রামে সেই মতো চাল বিলি শুরু হয়। কিন্তু এলাকায় অনেক প্রকৃত দুঃস্থের নাম বিপিএল তালিকায় না থাকায় তাঁরা প্রাপ্য চাল থেকে বঞ্চিত হতেন। ফলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নেন, একটি পরিবারকে ৩৬ কেজি চাল দেওয়ার পরিবর্তে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে ২৪ কেজি করে চাল দেওয়া হোক। প্রতিটি পরিবারকে সেই মতো স্লিপ দেওয়া হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতা হোসেন খান এবং আলুন্দা পঞ্চায়েতের প্রধান সুফিয়া বেগমের স্বামী আব্দুল হালিমের অভিযোগ, “রেশন ডিলার এক কেজি করে কম চাল দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। ৬১ জনকে কম চাল দিয়েছিলেন ওই ডিলার। তাঁদের ফের ১ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এর পরে যাঁরা চাল নিয়েছেন, তাঁরা ২৪ কেজি করেই পেয়েছেন।” এ দিন মোট ১৮৩টি পরিবার চাল পেয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। রেশন ডিলার আব্দুস সাত্তারের দাবি, “প্রতিটি বস্তাতেই চাল কম থাকায় এ দিন প্রথমে কাউকেই চাল দিতে চাইনি। বিডিও-কে বিষয়টি জানাব বলে ভেবেছিলাম। স্থানীয় লোকজন সব শুনে একটু কম চাল নিতে রাজি হয়ে যান। ইচ্ছা করে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।” যদিও পঞ্চায়েত প্রধান সুফিয়া বেগমের পাল্টা দাবি, “এলাকায় চার জন রেশন ডিলার আছেন। জুনিদপুরের ডিলার ছাড়া আর কেউই চাল কম দেননি গ্রাহকদের।” সিউড়ি ১-এর বিডিও বিনায়ক চৌধুরী বলেন, “ওই এলাকার খাদ্য পরিদর্শককে বিষয়টি দেখতে বলেছি। তাঁর কাছ থেকে রিপোর্ট পেলে বিষয়টি মহকুমাশাসককে জানাব।” |