আস্থাভোটে নিজেরই দলের প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ আনল সিপিএম। কার্যত তাঁর ভোটেই মন্তেশ্বর পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধান অপসারিত হয়েছিলেন। দলবিরোধী কাজের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর ভোটাধিকারও বাতিল হয়ে যাবে। ফলে ‘টস’ করে প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
সিপিএমের যে সদস্য নিজেদের প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁর নাম নিত্যানন্দ গড়াই। গত ১২-১৩ জুলাই আস্থাভোটের পরেই দলের পঞ্চায়েত সদস্য লক্ষ্মী ঘোষ তাঁর বিরুদ্ধে মন্তেশ্বরের বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। এ ব্যাপারে কী করণীয়, বিডিও প্রদীপ অগ্রবাল তা কালনা মহকুমাশাসকের কাছে জানতে চেয়েছেন। মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশ বিডিও-কে জানিয়ে দেওয়া হবে।”
১৩ আসনের মন্তেশ্বর পঞ্চায়েতে সিপিএমের ৭ জন, ফরওয়ার্ড ব্লকের ১ জন, আরএসপি-র ১ জন এবং তৃণমূলের চার জন সদস্য রয়েছেন। মাসখানেক আগে তৃণমূল প্রধান-উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলে ফব এবং আরএসপি সদস্যেরা তা সমর্থন করেন। কিন্তু সিপিএমের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের ঘর ভাঙাতে না পারলে বিরোধীদের পক্ষে প্রধান-উপপ্রধানকে পদচ্যুত করা সম্ভব ছিল না। এই পরিস্থিতিতেই, নির্ধারিত দিনে প্রকাশ্য ভোটাভুটির সময়ে নিত্যানন্দবাবু অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তাঁর যুক্তি, “প্রধান এবং উপপ্রধান জনবিরোধী কাজকর্ম করছিলেন। তাই ওঁদের বিরুদ্ধে ভোট দিই।” ফলে, সিপিএমের দুই পদাধিকারী ৬-৭ ভোটে পরাজিত হন।
আস্থা ভোটে প্রধান-উপপ্রধান পদচ্যুত হলে তাঁদের জায়গায় নতুন পদাধিকারী নির্বাচন করাই বিধি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এক ভোটদাতার বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ ওঠায় গোটা বিষয়টিই থমকে গিয়েছে। মহকুমাশাসক বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, নতুন প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনের আগে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যের ভোট গণ্য হবে না।” সে ক্ষেত্রে নতুন পদাধিকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ফলাফল ৬-৬ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। ব্লক অফিস সূত্রের খবর, ভোটের মাধ্যমে এই ‘টাই’ ভাঙতে না পারলে বিধি অনুযায়ী ‘টস’ করে নতুন প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচিত হতে পারেন।
টস এড়াতে ফের একপ্রস্থ দল ভাঙানোর খেলা হয় কি না, সেটাই এখন দেখার। |