বাবাকে খুনের অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে। স্থানীয় কুণ্ডুপাড়ার বাসিন্দা ইন্দ্রভূষণ চক্রবর্তীকে (৭০) তাঁর ছেলে গোপাল কাটারি দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে তাঁকে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই গোপালকে আটক করা হয়। তাকে রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দ্রভূষণবাবু পেশায় পুরোহিত। এই পরিবারটি স্থানীয় পঞ্চায়েতে বিপিএল তালিকাভুক্ত। এ দিন সন্ধ্যায় ইন্দ্রভূষণবাবুর সঙ্গে বচসা শুরু হয় গোপালবাবুর। হঠাৎ তিনি কাটারি নিয়ে ইন্দ্রভূষণবাবুকে আক্রমণ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গোপাল মানসিক ভারসাম্যহীন। নেশা করে বাড়ি ফিরে মাঝেমধ্যেই মারধর করত বৃদ্ধ বাবা-মাকে। এ দিনও সেই ভাবেই ঘটনার সূত্রপাত।
টিনের চাল দেওয়া এক চিলতে ঘরে ইন্দ্রভূষণবাবুর স্ত্রী অসুস্থ মালতিদেবীকে প্রতিবেশীরা আগলে রেখেছেন। মালতিদেবী জানান, এ দিন সন্ধ্যায় বাড়ির উঠোনে বসে কাটারি দিয়ে জ্বালানির কাঠ কাটছিলেন ইন্দ্রভূষণবাবু। তাঁর কথায়, “হঠাৎ গোপাল ওর বাবার কাছে টাকা চায়। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে ওর বাবাকে এক আধলা ইট ছুড়ে মারে। ইটের ঘা খেয়ে উনি পড়ে যান। হাত থেকে কাটারি পড়ে যেতেই সেটা তুলে নিয়ে বারবার ওঁকে আঘাত করতে শুরু করে গোপাল।”
চোখের সামনে এই ঘটনা দেখে মালতিদেবী আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করে ওঠেন। তাতে কাটারি নিয়ে গোপাল তাঁর দিকেও তেড়ে যায় বলে অভিযোগ। মালতিদেবী কোনও রকমে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। ইতিমধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসেছিলেন। তাঁরাই গোপালের হাত থেকে কাটারি কেড়ে নেন। মালতীদেবী বলতে থাকেন, “ও আমার সব কিছু কেড়ে নিল। এ বার ও আমাকেও শেষ করে ফেলবে।” পূর্বস্থলী থানার সিআই দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “গোপাল চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর মানসিক অবস্থা কেমন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।” |