ফের সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল সিপিএমের কেতুগ্রাম ১ (উত্তর) লোকাল কমিটির সদস্য চাঁদগোপাল মাঝির বিরুদ্ধে। প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক ওই নেতার বিরুদ্ধে এর আগে নিজেরই স্কুলের ঘর তৈরির টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছিল।
সোমবার দুপুরে কেতুগ্রামের বেণীনগর গ্রামের চার বিপিএল তালিকাভুক্ত মহিলা চাঁদবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। কাটোয়া মহকুমাশাসককেও তাঁরা বিষয়টি জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, “এখনও আমার হাতে অভিযোগপত্র আসেনি। তা পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” কেতুগ্রাম থানার আইসি রঞ্জন সিংহ বলেন, “উনি ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগপত্র কেতুগ্রাম ১ বিডিও-র কাছে পাঠিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” |
পুলিশ জানায়, বেণীনগর গ্রামের ঈশানি দাস, মঙ্গলি দাস ও জ্যোৎস্না থান্ডার ২২,৫০০ টাকা করে এবং সুচিত্রা দাস ১৭,৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। গত ৩০ জুন তাঁরা ইন্দিরা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, “সে দিনই চাঁদগোপাল মাঝির নির্দেশে দুই সিপিএম কর্মী আমাদের মোটরভ্যানে চাপিয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কান্দরা শাখায় নিয়ে যায়। চাঁদবাবু শাখার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের টাকা আমাদের দাও। আমরা তা পঞ্চায়েতে জমা দেব। পঞ্চায়েত থেকে তোমাদের টাকা দেওয়া হবে।’ আমরা গরিব, অশিক্ষিত মহিলা। বিশ্বাস করে ওঁকে টাকা দিই। উনি যে টাকা মেরে দেবেন, ভাবতে পারিনি।”
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে মহিলারা জানিয়েছেন, পরে চাঁদবাবুর বাড়িতে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি নগদের বদলে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের চেক দেন। কিন্তু ব্যাঙ্কে তা ভাঙাতে গেলে তারা জানিয়ে দেয়, অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। তাঁরা ফের চাঁদবাবুকে ফোন করলে তিনি আশ্বাস দেন, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ে যাবে। কিন্তু অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় চেক ফিরে চলে আসে (যা বস্তুত চেকদাতার পক্ষে শাস্তিযোগ্য অপরাধ)। বেণীনগরের পার্থ ঘোষ, কালাচাঁদ ঘোষদের অভিযোগ, “ওই সিপিএম নেতা অনেককেই ভুল বুঝিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চেক ফেরত আসায় ওঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।” বহু চেষ্টা করেও চাঁদবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বেগতিক বুঝে সিপিএম নেতারা ইতিমধ্যেই দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট মুড়গ্রাম-গোপালপুর পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান প্রদীপ মহান্ত যেমন পরিষ্কার বলেন, “উনি অত্যন্ত অন্যায় কাজ করেছেন।” সিপিএমের কেতুগ্রাম ১ (উত্তর) লোকাল কমিটির সম্পাদক ফারুক মির্জার দাবি, “দল এ ব্যাপারে বিন্দুবিসর্গ জানে না। ইন্দিরা আবাসের ঘর তৈরি না করে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। তবে যে যেমন কাজ করবে, তেমনই ফল ভুগবে।” |