|
‘জোনাকিদের নিয়ে নাইট স্কুল খুলতে চাই’ |
প্রতিযোগিতা ছিল, একটি পোকাকে সঙ্গী করে কী ভাবে প্রকৃতির ভাল করবে।
এখানে প্রকৃতি বাঁচানোর দাওয়াই বাতলে দিচ্ছে জিনিয়াসরা। |
|
আমাদের বাড়ির জবা ফুল গাছে প্রতি বছরই বর্ষার সময় এক ধরনের পোকা দেখা যায়। বেশ গম্ভীর ভাব ওদের। এক মনে গাছের পাতা খেতে থাকে। অনেকটা গুবরে পোকার মতো দেখতে, তবে অত বড় নয়, এইটুকু! আর কী আশ্চর্য, হাত দিয়ে ধরলেই ওরা হাত-পা গুটিয়ে নেয়। যেমন বিটকেল দেখতে, তেমন স্বভাব! নামটা ওদের বিটেল পোকা। ওদের মধ্যে এক জনকে বেছে নিয়ে একটা দল বানালাম। বললাম, এসো প্রকৃতির ভাল করি। গাছের পাতাটার মাথা আর মধ্যেটার আধটুকু খেয়ে কী লাভ? বরং যেটুকু খাবার সেটুকু খেয়ে ওর গোড়াটা খেয়ে পাতাটাকে মাটিতে পড়তে দাও। পাতাটা মাটিতে মিশে জৈব সার হয়ে প্রকৃতির ভাল করবে। গাছও বাঁচবে প্রকৃতিও বাঁচবে। |
সৌম্য ভট্টাচার্য। দশম শ্রেণি, সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুল, বারাসাত |
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
আমি জোনাকিদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামে ‘নাইট স্কুল’ খুলতে চাই। আমি হব শিক্ষক আর যত জোনাকি আছে, তারা একসঙ্গে সবাই আলো দেবে। সেই আলোতে গ্রামের সেই বচ্চারা পড়বে, যাদের বাড়িতে ইলেকট্রিক নেই বা কেরোসিন কেনার পয়সা নেই। দু’ঘণ্টা ধরে চলবে ক্লাস। ক্লাসে বিভিন্ন ধরনের পড়াশোনা ছাড়াও শিখবে ‘বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণ’-এর উপকারিতা। তাতে নানা ভাবে মানুষরা উপকার যেমন পাবে, তেমনই জোনাকিদের মতো কীটপতঙ্গ ও পশুপাখিরাও বাঁচবে। |
দেবার্ঘ্য গিরি। তৃতীয় শ্রেণি, সাউথ পয়েন্ট স্কুল
|
বর্ষাকালে কালো বা লাল পিঁপড়ের উৎপাত খুব। খাবার থেকে শুরু করে জামাকাপড়, ঘরের আনাচ-কানাচ, বিছানাপত্তর সবেতেই এরা উপদ্রব করে বেড়ায়। এদেরকে বন্ধু করে প্রকৃতিকে বাঁচানোর একটা ফন্দি আঁটা যেতে পারে। বর্ষায় চারিদিকে নদীর বাঁধ ভেঙে জলে ভেসে যায়। বাঁধ সারাতে এই খুদে সৈনিকদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। কারণ,
এদের সংখ্যা অগুনতি এবং এরা নিজেদের ওজনের থেকে দশগুণ ভারী ওজন বহন করতে পারে। নিজেকে
এদের সঙ্গে জড়িয়ে প্রকৃতিকে রক্ষা করার কাজে সামিল হতে চাই। |
অঙ্কুশ পাল। চতুর্থ শ্রেণি, বি ডি মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউট
|
কেন্নোরা মরা, পচা জিনিস খায়। সে কাউকে মারে না। তাই কেন্নোরা আমার বন্ধু। কেন্নোদের নিয়ে সভা করে বলব তোমাদের তো আঘাত হানার কোনও অস্ত্র নেই, তাই যারাই দল বেঁধে গাছ কাটতে আসবে, একসঙ্গে তাদের কানে-মাথায় সুড়সুড়ি আক্রমণ করবে, যাতে তাদের হাত থেকে কুড়ুল খসে পড়ে। আমি সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে কেন্নো বন্ধুদের সুড়সুড়ির আক্রমণ বুঝিয়ে বলব: ফিরে যাও, গাছ কেটো না। ও বাঁচলে তোমরাও বাঁচবে। সার্থক হোক অরণ্য সপ্তাহ পালন। এসো একসঙ্গে বলি: মন আমার মন, ফিরে আসুক বন। |
অভিক দাস। দি আত্রেয়ী ডি এ ভি পাবলিক স্কুল। বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর
|
পোকা বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছি মাকড়সাকে। পরিবেশ বাচানো যায় কী ভাবে, তার ফন্দি আঁটলাম। প্রথমেই বৃক্ষরোপণ করতে হবে আমাদের। মাকড়সাকে আমি বললাম, তার তো আটটা পা, তাই চারটে পা দিয়ে সে দাঁড়াক এবং চারটে পা হাতের মতো ব্যবহার করুক। কিন্তু মাকড়সার প্রথমে একটু সমস্যা হলেও পরে ও বেশ ভাল ভাবেই দাঁড়াতে পারল। এবং সম্মতি দিল সেও বৃক্ষরোপণ করবে। এ বারে ঠিক হল কাগজে পরিবেশ সচেতন সংক্রান্ত কিছু স্লোগান লিখে লাগিয়ে দেওয়া হবে গাছের পাশে। কিন্তু মাকড়সা মানুষের ভাষায় লিখতে জানে না, তাই সে বলল, নিজের ভাষায় লিখে মাকড়সা সমাজে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। আর একটা প্ল্যান এসেছে। মাকড়সার মুখের সম্মুখ থেকে এক ধরনের লালা নিঃসরণ করে। এই লালা দিয়ে সে জাল তৈরি করে। এই জাল খুব হাল্কা কিন্তু ইস্পাতের মতো শক্তিশালী। এই জাল দিয়ে যদি মাকড়সা কোনও পুকুরকে ঢেকে দেয়, তবে কোনও ব্যক্তি সেই পুকুরে ময়লা ফেলতে পারবে না, কারণ ওই জালে সমস্ত ময়লা আটকে যাবে। ফলে পুকুর বা নদীর জল দূষিত হবে না। |
বিশ্বদীপ পাল।
|
বর্ষাকালের সকালবেলায় এক পিঁপড়ে বন্ধুর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। আমি তাকে ডেকে বললাম বন্ধু, বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সে বলল, কী করতে হবে বন্ধু? আমি বললাম, তুমি বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করে এক জায়গায় জমা রাখো। এক মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করে এক জায়গায় জমা করলাম। তার পর জৈব ও রাসায়নিক সার সংগ্রহ করে তাতে ভাল করে মেশালাম। তার পর নানা বৃক্ষ ও গুল্ম জাতীয় চারাগাছ লাগালাম। আমি প্রতি দিন সেই গাছগুলোতে জল দিতে লাগলাম। এ ভাবে কিছু দিন চলার পর গাছগুলি বড় হল। সেই জায়গাটিতে এত সুন্দর সুন্দর গাছ হল যে, আমি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সেই জায়গাটিতে যেতে লাগলাম।
|
ঋতম রায়। অষ্টম শ্রেণি, গঙ্গাজলঘাঁটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাঁকুড়া
|
আমার মৌমাছি ও বোলতাকে ভাল লাগে। ওদের সঙ্গে আমি বন্ধুত্ব করব ও দল বানাব। অনেক দুষ্টু লোক গাছ কাটতে আসে। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে দুষ্টু লোকগুলোকে তাড়াব ও ওদের বলব হুল ফুটিয়ে দিতে। আমাদের গাছগুলো বাঁচবে ও আমরাও বাঁচব প্রাণ ভরে। |
কৌশিকী সরকার। দ্বিতীয় শ্রেণি, গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল
|
ছাদের ফুলগাছের টবগুলি থেকে হঠাৎ শুনি একটা রঙিন প্রজাপতি মানুষের মতো কথা বলছে তোমাদের কোনও ফলের গাছ নেই? আমি বললাম, কেন? ও বলল, আমি ফুলে ফুলে মধু খাই ও ফুলের পরাগ মিলন ঘটায়, যা থেকে ফল হয়। তোমাদের এখানে আমি মধু খাই, কিন্তু প্রকৃতির উপকার করতে পারি না। তাই...। আমি মজা পেয়ে বললাম, এসো তবে। আমরা দু’জনে মিলে যুক্তি করলাম। ও আর আমি পাড়ার ফুলের গাছগুলিতে পরাগ মিলন ঘটাব। আমি হাঁটি, ও আমার পাশে উড়ে চলে। আমরা গেলাম কলতলার পিছনের পাতিলেবুর গাছে। সেখানে ফুল ফুটেছে, কিন্তু ফল নেই। ও গাছটিতে উড়ে উড়ে মধু খেল। একে একে পাড়ার সমস্ত গাছে নিয়ে গেলাম। এক সময় ও চলে গেল। সে বলল, আবার এসে আমার সঙ্গে এই অভিনব অভিযান চালাবে। নতুন সৃষ্টির আনন্দে আমার মন ভরে উঠল। |
সঙ্কর্ষণ সিংহ। ষষ্ঠ শ্রেণি, বহরমপুর জে এন একাডেমি |
জিনিয়াস জিন্দাবাদ
ধরো, তোমায় এমন একটা ইসকুল বানাতে বলা হল, যে ইসকুলে যেতে তোমার
খু-উ-ব খু-উ-ব ভাল লাগবে। শুধু তোমার নয়, তোমার অন্য বন্ধুদের, যাদের পছন্দগুলো
হয়তো একটু আলাদা, তাদেরও ভাল লাগবে। কী হবে সেই ইসকুলে? কী হবে না? এই নিয়ে
তোমার ভাবনাচিন্তা ঝটপট লিখে ফেলো
আর খামে ভরে পাঠিয়ে দাও ১৩ অগস্টের মধ্যে।
খামের উপর লেখো
জুলাইয়ের জিনিয়াস জিন্দাবাদ
রবিবারের আনন্দমেলা
আনন্দবাজার পত্রিকা
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|