মন ভাল রাখার অন্যতম মোক্ষম দাওয়াই কিন্তু সুন্দর একটি বাড়ি। সুন্দর করে বাড়িকে সাজিয়ে রাখতে পারলে মনও আপনাআপনি ভাল হয়ে যায়। তাই তো এত আয়োজন, নিত্য নতুন পরিকল্পনা। ঘরের আনাচে-কানাচে নতুনের চমক। সুযোগ পেলেই ফার্নিশিং-এর দোকানে ঢুঁ মারা। ঠিক কী ভাবে সাজালে ব্যালকনি টু বাথরুম সেরা সাজে সেজে উঠবে তাই নিয়ে আপনারও চিন্তার শেষ নেই। তবে একটু খেয়াল করে দেখুন তো, একটা ছোট্ট জিনিসের কথা সবার মতো হয়তো আপনিও ভুলে বসে আছেন। কারণ সে যে সত্যিই ছোট্ট। তাই সে দুধ-ভাত। কিন্তু ছোট হলেও কাজে সে মোটেও খাটো নয়। বাড়ির বাইরের নেমপ্লেট-এর কথা বলছিলাম। তার প্রতি নজর দিতে হবে তো। হাতে হাতে ফল পাবেন। নতুন অতিথিকে আপনার রুচির সঙ্গে পরিচয় করানোর প্রথম দায়িত্ব যে তারই।
সাদা মার্বেলে গোটা গোটা কালো হরফে লেখা অমুক নিবাস বা তমুক ভিলা অথবা কাঠ বা বড়জোড় পেতলের প্লেটে খোদাই করা কর্তা-গিন্নির নাম। এই হল গতানুগতিক নেমপ্লেট। একটু ঘুরলেই বুঝতে পারবেন বাজারে এসে গেছে বাহারি অরও কত কিছু। তাদের ভাবনা ও সৌন্দর্য সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। নেমপ্লেট-এর উপাদানেও বৈচিত্র। কাচ, কাঠ, সেরামিক, মেটাল-এর পাশাপাশি জুট, বাঁশ, ফাইবার এমনকী নারকেলের মালা দিয়েও তৈরি হচ্ছে রকমারি নেমপ্লেট। চোখ ধাঁধানো নকশা তাদের। কোনওটা খোলা ডায়রির পাতা, কোনওটা বইয়ের আকৃতির। আবার ভারতের মানচিত্রের আদলও উঠে আসছে নেমপ্লেট-এর নকশায়। |
তবে চাহিদা বেশি রঙিন মার্বেলের তৈরি নেমপ্লেট-এর। এবড়ো-খেবড়ো রঙিন পাথর। সেটাই নেমপ্লেট। ওপরে জ্বলজ্বল করছে দুই-তিনটি নাম। ঠিক যেন কেয়ারলেস বিউটি লুক। পিছনে থাকতে পারে দুটি মোটা শক্ত কাচের স্ট্যান্ড। মিলবে বেশ কয়েকটি রঙে। ফলে সদর দরজার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে পারেন। কাঠের নেমপ্লেটও রকমারি নকশায় পাওয়া যাচ্ছে। উপরে বাঁ দিকে লোহার নকশা সাধারণ একটি কাঠের নেমপ্লেট-এর সৌন্দর্যে আলাদা মাত্রা আনছে। লাগাতে পারেন কাঠের তৈরি পাখির মুখে ছোট্ট একটি নেমপ্লেটও। আর বাড়ির সদস্য সংখ্যা তিন-চার জন হলে পিছনে লোহা বা স্টিল-এর স্ট্যান্ড লাগিয়ে ওপরে আলাদা আলাদা করে লাগাতে পারেন সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী আলাদা আলাদা কাঠের প্লেট। তাতে আলাদা আলাদা নাম। তবে কাঠের নেমপ্লেট কেনার আগে অবশ্যই জেনে নেবেন সেটি ওয়াটার-প্রুফ কি না। ছিমছাম দেখতে পেতলের নেমপ্লেটও লাগাতে পারেন। নকশাদার পেতলের প্লেট-এর উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বেশ কয়েকটি মেপল পাতা - এমন দেখতে নেমপ্লেটও মিলবে। পাতাগুলি কাঠের তৈরি। তার মাঝখান থেকে উঁকি দেবে নাম। আবার নতুন সংসার পেতেছেন। দরজার পাশে লাগাতে পারেন ছোট্ট একটা বাড়ির আদলে তৈরি নেমপ্লেট। বাড়ির কাঠামোটি কাঠের তৈরি। ভেতরে টেরাকোটার কাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দুটি নারী-পুরুষের মুখ। ঠিক যেন বাড়ির কর্তা-গিন্নির ছবি। নীচে নাম। পাশে ঝুলছে ছোট্ট দুটি ঘন্টি। ভেবে দেখুন, এই রকম একটি নেমপ্লেট লাগালে বন্ধুরা তারিফ না করে আর পারে?
বেশ কিছু আইডিয়া দেওয়া হল। বাজার ঘুরলেই পাবেন আরও কিছু নকশার ধারণা। তবে আঁকার প্রতি একটু ঝোঁক থাকলে রেডিমেড না কিনে বাইরের দেওয়ালে নিজস্ব সৃষ্টিশীলতার ছাপও রাখতে পারেন। কাঠ, তুলি, রঙের মতো কিছু জিনিস জোগাড় করে বসে পড়ুন। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে সাধের নেমপ্লেট। যাতে থাকবে তৃপ্তির সঙ্গে খানিকটা ভালবাসার পরশও। |