|
গরমে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে কুল হেয়ার কাট |
চুল যে-ই ঘাড় ছাড়াল, অমনি কাঁচির কুচ কুচ। উঁহু। আগে বয়স দেখুন, তার পর ঋতু
দেখুন। তবে না হেয়ার স্টাইল! জানালেন হেয়ার স্টাইলিস্ট দীপন পাল (দীপু) |
রবিবারের দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর বাবার সঙ্গে আলমারির তলার তাক থেকে পুরনো অ্যালবামের ধুলো ঝেড়ে, হাঁচি সামলে পাতাগুলো ওল্টালে যে সব মামা (ও বাড়ির) ও কাকাদের (এ বাড়ির) ছবিগুলো নিয়ে আমরা প্রচণ্ড হাসাহাসি করি, সেগুলো হচ্ছে এখনকার দিনের ‘আউট অব ফ্যাশন’ চুলের কাট নিয়ে। আর সেই কাটটির নাম হচ্ছে ‘অমিতাবচ্চন হেয়ারকাট’। অসম্ভব রোগা চেহারার মামার যে চুলের কাট, দোহারা গড়ন কাকারও সেই একই চুলের কাট, আবার ভুঁড়িদার জামাইবাবু, তাঁরও পছন্দ একই স্টাইল। এখন আমরা হাসাহাসি করলেও সত্তর-আশির দশকে যাঁর এই চুলের কাট থাকবে না তিনি কিন্তু ব্রাত্য। |
|
মেয়েদের সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা তো তাঁর গেলই, রকে বসাও বাদ হয়ে গেল। এই ব্যাপারে তখন সবাই ছিল একমত। ধনী, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা বস্তির ছেলে সকলের একটাই চুলের কাট ছিল, কোনও পুঁজিবাদী মনোভাব এ ক্ষেত্রে কোনও শ্রেণিবিভাগ করতে পারেনি। এখন কিন্তু আমরা এই ধরনের ব্যাপারস্যাপার দেখি না, যে একই চুলের কাট সকলের।
অমিতাভ বচ্চনের যে হেয়ারকাটটি ছিল, সেটির নাম ছিল ‘হিপস্টার হেয়ারকাট’। ইরান থেকে এই স্টাইলটির আগমন, সত্তরের দশকে ইরানের কিছু ছেলে এই হেয়ারকাটটি করত। ইরানের রাজার এই কাটটি এতটাই পছন্দ হয় যে তিনি একটি ছবি তৈরি করেন শুধুমাত্র এই কাটটিকে বিখ্যাত করার জন্য। অমিতাভ বচ্চনের মাথায় এই স্টাইলটি জায়গা করে নেয়।
যাই হোক, এখন আমরা জেনে নিই এখনকার দিনে ছেলেদের কোন হেয়ারস্টাইল হিট। আগে আমরা জানতাম না, ঋতু অনুযায়ী হেয়ারস্টাইল বদলানো মাস্ট। এখন কিন্তু এ রকমটাই চলছে। গরম ও বর্ষাকালে যে হেয়ারকাটটি চলে তার নাম ‘কর্পোরেট হেয়ারস্টাইল’ বা ‘কুল হেয়ারকাট’।
কর্পোরেট হেয়ার কাট এই কাটে চুলের দৈর্ঘ্য বেশি লম্বা হয় না। পাশ দু’টি এবং পেছনের দিকটি ছোট থাকে। মাঝের অংশটি মাঝামাঝি ভাবে কাটা হয়। এটিকে যত্ন-আত্তি করতে বিশেষ অসুবিধা হয় না, যার জন্য একে কুল হেয়ার কাটও বলা হয়।
শীতকালে যে হেয়ারস্টাইলগুলি খুব চলে তার নাম হচ্ছে ‘হট হেয়ারকাট’। যেমন
১) ফাঙ্কি হেয়ারকাট
২) স্পাইক হেয়ারকাট
৩) লেসার হেয়ারকাট
|
ফাঙ্কি হেয়ারকাট |
একে ‘আনটাইডি হেয়ারকাট’ও বলতে পারেন। পুরো চুলটি দেখে মনে হয় অগোছালো দু’টি পাশ ছোট-বড় অসমান ভাবে কাটা থাকে। মাঝে মধ্যে লম্বা আবার কিছু ছোট থাকে।
|
স্পাইকি হেয়ার |
কাট পাশ দু’টি পেছন দিকে সমান করে কাটা থাকে এবং মাথার মাঝখানটি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় গুচ্ছ গুচ্ছ চুল দিয়ে। এর জন্য হেয়ার ওয়াক্স বা জেল ব্যবহার করা হয়।
|
লেজার কাট |
যাঁরা একটু লম্বা চুল পছন্দ করেন তাঁদের জন্য এই কাটটি আদর্শ। কাঁধ পর্যন্ত চুলটি যাবে, এ ছাড়া পুরো মাথা জুড়ে ছোট বড় করে কাটা থাকবে চুলটি। সামনের দিকের লেয়ার্স অসমান থাকবে তবে লম্বা লেয়ার্স-এর সংখ্যা বেশি থাকবে। এই চুলের পরিচর্যা করা কঠিন। সেই কারণে এই চুলের স্টাইলটি কম মানুষই পছন্দ করেন। এ ছাড়া যাঁদের চেহারা খুব লম্বা-চওড়া তাঁদেরকে এটি অধিক মানায়।
এ বার আসি ছোট ছেলেদের কথায়। একদম ছোটদের, পাঁচ থেকে পনেরো চলে মাশরুম কাট এবং তার পরবর্তী অধ্যায়ে চলে স্পাইক কাট। |
|
বর্ষাকালে চুলের যত্ন |
বর্ষার সময় একটা ভ্যাপসা গরম সর্বদাই থাকে। সেই কারণে মাথা প্রচণ্ড ঘামে। চুলের গোড়ায় ঘাম বসে চুল খুবই ওঠে। বর্ষাকালে প্রতি দিন শ্যাম্পু অত্যন্ত জরুরি। শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ছেলেরা একদমই লাগাবেন না। ছোট চুলের জন্য কন্ডিশনার স্ক্যাল্প-এ চলে যায় এবং চুলের অত্যন্ত ক্ষতি হয়। বর্ষাকালে কন্ডিশনার চুলের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এ ছাড়াও শ্যাম্পুটি হাল্কা অর্থাৎ কম কেমিক্যালযুক্ত বা হার্বাল হলে ভাল হয়। মাসে এক বার হেয়ার-স্পা করিয়ে নেবেন।
ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি সময় না থাকলে সমপরিমাণ অলিভ অয়েল ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে গরম করে হাল্কা মাসাজ করে মাথায় লাগাতে হবে। এর পর গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখবেন পাঁচ থেকে সাত মিনিট। এর পর শ্যাম্পু করে নেবেন।
সময় একদম কম থাকলে স্নানের আগে পাতিলেবুর রস লাগিয়ে একটু ঘোরাফেরা করে শ্যাম্পু করে নেবেন। দেখবেন, খুশকিও কম থাকবে, চুলে একটা ঔজ্জ্বল্যও আসবে।
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|