পুলিশের তাড়া খেয়ে কালজানি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন যুবক। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ার শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ঘটনার পর উদ্ধার কাজে স্পিডবোট নামায় মহকুমা প্রশাসন। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে এলাকার কালজানি নদীর পাড়ে কয়েকজন যুবক বসেছিলেন। এলাকায় পুলিশ টহল দিতে গেলে ওই যুবকেরা ভয় পেয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। অন্যরা সাঁতরে নদী থেকে উঠে এলেও এলাকার এক যুবক নিখোঁজ হন। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় এ দিন বলেছেন, “শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সঞ্জয় কলোনির বাসিন্দারা জানান যে, নিখোঁজ যুবকের নাম রাজেশ ঘোষ ওরফে লাটিম। আলিপুদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “রাতের দিকে পুলিশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সঞ্জয় কলোনি এলাকায় পুলিশের জিপ ঢুকলে কিছু যুবক জলে ঝাঁপ দেয় বলে শুনেছি। বাস্তবে কী ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দখা হচ্ছে।” |
আলিপুরদুয়ার থানার আইসি মনোজ চক্রবর্তী জানান, নিখোঁজ যুবকের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পাপু মিত্র, কাজল মালাকার, সঞ্জয় সুত্রধররা জানান, সেদিন সন্ধ্যায় তাঁরা বাড়ির পাশে কালজানি নদীর পাড়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে রাজেশ ঘোষ এবং তপন মোহান্ত নামেও দুই যুবক ছিলেন। রাত সাড়ে ৮-৯টা নাগাদ পুলিশ দেখে তাঁরা ভয় পেয়ে যান। কালজানি নদীর দিকে দৌড়তে থাকেন। ওই যুবকেরা বলেন, “পুলিশও পিছু নেয়। ভয়ে আমরা নদীতে ঝাঁপ দিই। কয়েকজন পুলিশ কর্মী নদীর পাড়ে গিয়ে উঠে আসার নির্দেশ দেন। না-হলে গুলি করার ভয় দেখান। তাতে আমরা ভয় পেয়ে নদীর গভীরে চলে যাই। পাপু মিত্র বলেন, “সেই সময় তপন জলে ডুবে যাচ্ছিল। আমি ও কাজল তাকে ঠেলে একটু এগিয়ে কম জলের দিকে নিয়ে যাই। অন্ধকারে জলে ‘আর কে আছিস’ বলে ডাক দিলে লাটিম সাড়া দেয়। পরে পুলিশ চলে গেলে আমরা চার জন পাড়ে উঠে পড়ি। লাটিম-না ওঠায় রাত ১২টা পর্যন্ত খোঁজাখুজি করি। ভোর বেলাতেও নৌকা ও জাল নিয়ে খুঁজলেও লাটিমের হদিস মেলেনি।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, নিখোঁজ যুবক পেশায় রং মিস্ত্রি। লাটিমের মা চিনু দেবী বলেন, “রাজেশ তার বাবার সঙ্গে রং মিস্ত্রির কাজ করত। কাল বিকেলে বাড়ি থেকে বার হয়ে নদীর ধারে শনি মন্দিরে যায়। রাতের বেলায় এলাকায় পুলিশ কিছু ছেলের পিছনে দৌড়াচ্ছে বলে খবর পাই। পরে শুনি লাটিম জলে ঝাঁপ দিয়ে আর উঠেনি।” লাটিমের বানিড়তে গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী সীমা কোলে বাচ্চা নিয়ে মাঝে মাঝেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছেন। |