|
|
|
|
চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু, উদ্বিগ্ন ৪২৩ নয়া শিক্ষক |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে শোকজ হওয়া ৪২৩ জন নবনিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘চার্জ’ গঠন করা হচ্ছে। গত বছর জলপাইগুড়ি জেলার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর নিয়োগের পক্রিয়া এবং আবেদনকারীদের পরীক্ষার খাতা পরীক্ষা করে ‘সার্বিক অনিয়ম’ হয়েছে বলে জানিয়ে দেয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তৎকালীন চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয় এবং সচিবকে অবনমিত করা হয়। কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে ৪২৩ জন নবনিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করা হয়। সিংহভাগ নবনিযুক্ত শিক্ষকেরা শোকজের জবাবও পাঠিয়ে দেন। এবার তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সুত্রে জানা গিয়েছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিটি শোকজের জবাব খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখার পরে সকলের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চার্জ গঠন করা হবে। শোকজ হওয়া সকলকে শুনানির জন্য ডাকা হবে এবং ফের তাঁদের যোগ্যতা খতিয়ে দেখা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলবে বা যাদের ক্ষেত্রে শিক্ষক পদে চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা পাওয়া যাবে না তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু নবনিযুক্ত শিক্ষকের বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। জলপাইগুড়ি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক উৎপল বিশ্বাস বলেন, “স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে পাঠানো একটি নির্দেশের ভিত্তিতেই চার্জ গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী একমাসের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।” চার্জ গঠন ও শুনানির পরে শেষ ধাপে যোগ্যতার পরীক্ষা নেওয়া হবে শিক্ষকদের। যে সব নবনিযুক্ত শিক্ষক লিখিত পরীক্ষায় রচনায় বেশি নম্বর পেয়েছিলেন এবং যাঁদের উত্তরপত্রে সব উত্তর ঠিক ছিল তাঁরা প্রকৃতই বেশি নম্বর পাওয়ার যোগ্য কি না তা ফের পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে বলে সংসদ সুত্রে জানা গিয়েছে। শোকজ হওয়া সব শিক্ষকের ক্ষেত্রেই তারা শিক্ষক পদে চাকরির যোগ্য কি না তা খতিয়ে দেখবে নতুন করে তৈরি হওয়া তদন্ত কমিটি। গত ডিসেম্বর মাসেই রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপে এবং পদ্ধতিগত কারণে সেই প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে জলপাইগুড়ি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পদে জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসককে বসানো হয়েছে। রাজ্যের নির্দেশেই নতুন করে প্রাথমিকে নিয়োগের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের এক সচিব স্তরের আধিকারিক বলেন, “স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, গত বছরের প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে অন্যান্য জেলায় এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই জলপাইগুড়িকে নজির হিসেবে রাখা হবে।” গত বছরের জুনে জেলায় ১৪০০ নবনিযুক্ত শিক্ষকের প্যানেল প্রকাশ হতেই জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সংসদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী, জেলা সিপিএমের সম্পাদক, এবিটিএর সম্পাদক-সহ সিপিএমের তাবড় নেতাদের আত্মীয়স্বজনের নাম প্যানেলে থাকায় জেলা জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। |
|
|
|
|
|