|
|
|
|
তর্জনী বামেদের দিকে |
ক্ষুদ্রশিল্পে ঢালাও বকেয়া ভর্তুকি নিয়ে বিপাকে সরকার |
সুপ্রকাশ চক্রবর্তী • কলকাতা |
একেই বুঝি বলে উলটপুরাণ!
বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ঠিক সময়ে টাকা খরচ করতে না-পারার জন্য কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকা ফেরত যাওয়ার খবরই মিলত।
কিন্তু এ বার ঘটেছে উল্টো ঘটনা। ফেরত যাওয়া তো দূরের কথা, অন্তত একটি প্রকল্পে বিগত সরকার এত আবেদন মঞ্জুর করে গিয়েছে যে, তা মেটাতে প্রাপ্ত অনুদানের দ্বিগুণ টাকা লাগবে। প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পে ক্ষুদ্রশিল্প স্থাপনে সহায়তার জন্য কেন্দ্র গত আর্থিক বছরে রাজ্যকে অনুদান দিয়েছিল। তাতে যত শিল্পকে ভর্তুকি দেওয়া যাবে, আগের বাম সরকার তার
থেকে অনেক বেশি আবেদন মঞ্জুর করে দিয়ে চলে গিয়েছে। সংখ্যাটা এত বেশি যে, প্রায় দ্বিগুণ ভর্তুকি লাগবে। ফলে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেও চলতি আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য শিল্পোদ্যোগীদের কাছ থেকে আবেদন চাইতে পারেনি।
গত আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পে কেন্দ্র ৬৭ কোটি টাকা ভর্তুকি মঞ্জুর করেছিল পশ্চিমবঙ্গের জন্য। আর চলতি আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পে ভর্তুকি বাবদ রাজ্যকে ৫৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। আধিকারিকেরা হিসেব করে দেখেছেন, গত বছর মঞ্জুর করা আবেদনগুলির বকেয়া ভর্তুকি দিতেই ৪৭ কোটি টাকা খরচ হয়ে যাবে। এই অবস্থায় ওই প্রকল্পে চলতি আর্থিক বছরে নতুন করে আবেদন চাওয়া হলে সরকারের হাতে তাঁদের ভর্তুকি দেওয়ার জন্য পড়ে থাকবে মাত্র ছ’কোটি টাকা। শুক্রবার কলকাতা সফররত কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রশিল্প মন্ত্রী বীরভদ্র সিংহকে এই সমস্যার কথা জানান রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্পমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে তাঁর আর্জি, গত বছরের আবেদন বাবদ নতুন সরকারকে বকেয়া ভর্তুকির যে-বোঝা বইতে হবে, সেটা যেন কেন্দ্র মিটিয়ে দেয়। নইলে রাজ্য সরকার চলতি আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পের জন্য ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের কাছ থেকে নতুন করে দরখাস্ত চাইতে পারবে না।
মানসবাবু বলেন, পূর্ববর্তী সরকার ‘অত্যুৎসাহী’ হয়ে পুরো প্রকল্পটিকে ‘লন্ডভন্ড’ অবস্থায় রেখে গিয়েছে। আইনানুগ পথে পুরো প্রকল্পটিকে ফের সুষ্ঠু ভাবে চালু করতে তিনি কেন্দ্রীয় সাহায্য চেয়েছেন। বীরভদ্র সিংহ তা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের সচিব অনুপ চন্দ এই ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ চেয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন। সরকারি সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে কারখানার সাজসরঞ্জাম খাতে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করেছে, এমন পণ্য উৎপাদক শিল্পকে এবং সাজসরঞ্জাম খাতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেছে, এমন পরিষেবা প্রদানকারী শিল্পে ভর্তুকি মঞ্জুর করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় ভর্তুকির পরিমাণ হয় ৩০-৩৫%। শিল্পোদ্যোগীকে বিনিয়োগ করতে হয় ৫-১০%। বাকিটা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ মেলে। গত বছর ওই প্রকল্পে সারা রাজ্য থেকে ২৭ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়ে। তার মধ্যে বিগত সরকার ২৫ হাজার শিল্পে ভর্তুকি ও ঋণ দেওয়ার জন্য বিষয়টি ব্যাঙ্কে পাঠায়। ব্যাঙ্কগুলি ১১৫৫৬টি শিল্পকে ঋণ পাওয়ার উপযুক্ত বলে অনুমোদন করে। সেই বাবদ গত বছরের কেন্দ্রীয় ভর্তুকির দায় দাঁড়িয়েছে ১১৪ কোটি টাকা। |
|
|
|
|
|