|
|
|
|
ভূমি ট্রাইব্যুনাল নিয়ে রাজ্য যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের ল্যান্ড বা ভূমি ট্রাইব্যুনাল অসাংবিধানিক বলে কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেওয়ায় ওই ট্রাইব্যুনালের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে তো বটেই। সেই সঙ্গে এ-পর্যন্ত ভূমি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া বিভিন্ন রায়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় ওই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের আইন ও বিচারমন্ত্রী মলয় ঘটক শুক্রবার জানান, হাইকোর্টের ওই রায়ের প্রতিলিপি তাঁরা হাতে পেয়েছেন। রায় অনুযায়ী ভূমি ট্রাইব্যুনাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে রায়ে বেশ কয়েকটি সংশোধনী আনার কথা বলা হয়েছে। মলয়বাবু বলেন, “এখন রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন নেই। ফলে সেই সংশোধনী আনা যাবে না। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।” সুপ্রিম কোর্ট যদি এই ব্যাপারে স্থগিতাদেশ না-দেয়, তা হলে ভূমি ট্রাইব্যুনালে জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলার কী ব্যবস্থা হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। ভূমি ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও কর্মীরা এখন কী করবেন, আলোচনা শুরু হয়েছে তা নিয়েও। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইন ও বিচারমন্ত্রী মলয়বাবুর সঙ্গে কথা বলেছেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেখানেই।
হাইকোর্টের ওই রায়ের পরে আরও একটি প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। তা হল, ভূমি ট্রাইব্যুনাল যদি অসাংবিধানিক হয়, তা হলে ওই ট্রাইব্যুনাল এত দিন যে-সব রায় দিয়েছে, সেই সমস্ত রায়ও অসাংবিধানিক কি না। এই ব্যাপারে আইনজীবীরা স্পষ্টতই দু’ভাগ হয়ে গিয়েছেন। এক দল আইনজীবী মনে করেন, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট রায় প্রকাশের আগে পর্যন্ত ভূমি ট্রাইব্যুনাল যে-সব রায় দিয়েছে, তাতে কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করা সম্ভব নয়। ভূমি ট্রাইব্যুনাল অসাংবিধানিক, এই রায় তো তখন ছিল না। তাই সেই সময়ে ভূমি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সব রায়কেই গ্রহণ করতে হবে। অন্য এক দল আইনজীবীর বক্তব্য, পুরো ভূমি ট্রাইব্যুনালই অসাংবিধানিক হলে তাদের কোনও রায় সাংবিধানিক হতে পারে না। এই ব্যাপারে পিটিটিআই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের দৃষ্টান্ত টানছেন তাঁরা। ওই সব আইনজীবীর বক্তব্য, হাইকোর্ট যখন অনেক প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা পিটিটিআই-কে অবৈধ ঘোষণা করে, তখন সেই সব কেন্দ্রে আগে প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের শংসাপত্রও অবৈধ হয়ে যায়। একই ভাবে ভূমি ট্রাইব্যুনাল যদি সংবিধানসম্মত না-হয়, তা হলে সেই ট্রাইব্যুনাল এত দিন যা রায় দিয়েছে সেগুলোও সংবিধানসম্মত হতে পারে না।
এই প্রশ্ন, যুক্তি, পাল্টা যুক্তি নিয়ে বিতর্ক চলছে। রাজ্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় না-দেওয়া পর্যন্ত এর জবাব মিলবে না। |
|
|
|
|
|