|
|
|
|
দুই দলের বিবাদে চাল বিলির সভাই পণ্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মানবাজার |
স্বচ্ছ ভাবে যাতে বিপিএল তালিকাভুক্ত গ্রাহকদের মধ্যে খরার চাল বণ্টন করা যায়, সে জন্য শুক্রবার সর্বদল বৈঠক হওয়ার কথা ছিল গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। কিন্তু সিপিএম-তৃণমূলের বিবাদে সেই সভাই ভন্ডুল হয়ে গেল। ধাক্কাধাক্কি ও মারপিটে জড়িয়ে পড়ল দু’পক্ষ। পরে পুলিশ গিয়ে যুযুধান দু’পক্ষকে সামলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগে পুলিশ এক সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে।
পুরুলিয়ার মানবাজার পঞ্চায়েত কার্যালয়ের ঘটনা। চাল বণ্টনের জন্য এ দিন সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। মানবাজার ব্লক কার্যালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, খরার জন্য ১৮০ মেট্রিক টন চাল মিলেছে। মানবাজার পঞ্চায়েতের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৩ মেট্রিক টন। মানবাজার ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তী জানান, এ দিন তিনি ও তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মুস্তাকিন খান ওই বৈঠকে যোগ দিতে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যান। মানবাজার পঞ্চায়েতের প্রধান অনুরূপা সেন-সহ সিপিএমের আরও কিছু নেতা-কর্মী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএমের মানবাজার লোকাল কমিটির সদস্য সুদীপ ওরফে খোকন চৌধুরী মুস্তাকিমকে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন। |
|
কার্যালয়ে তালা। ছবি: সমীর দত্ত। |
তৃণমূলের ছাত্র ব্লক সভাপতি অপূর্ব সিংহের দাবি, “আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। ওদের বলি, সিপিএমের একগুচ্ছ নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকলে তৃণমূলেরও থাকবে। এ কথা বলতেই খোকনবাবু আমাদের তেড়ে আসেন ও গালিগালাজ করেন। সিপিএম কর্মী সন্তোষ গঁরাই আমাদের কর্মী আশিস চক্রবর্তীর মুখে ঘুষি মারে। আশিস মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।” এই ঘটনার পরেই তৃণমূল কর্মীরা পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে প্রথম দিকে অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খায়। পরে বড় পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী কেবল চক্রবর্তীরও অভিযোগ, খোকনবাবুর ‘প্ররোচনা’তেই ঝামেলার সূত্রপাত। এসইউসি-র কমল চক্রবর্তী বলেন, “খোকনের ইশারাতেই সিপিএমের কিছু কর্মী তৃণমূলের লোকেদের ধাক্কাধাক্কি শুরু করে।” ব্লক কংগ্রেস সভাপতি চণ্ডী চক্রবর্তীও সিপিএমকেই অশান্তি বাধানোর জন্য দায়ী করেছেন।
খোকন ওরফে সুদীপবাবু অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। মানবাজার পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান অনুরূপা সেনের দাবি, “আমাদের কোনও কর্মী মারধর করেননি। বরং তৃণমূলের লোকেরাই কে কে বৈঠকে হাজির থাকবেন, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।” পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে সিপিএম কর্মী সন্তোষ গঁরাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মানবাজারের বিডিও কমলচন্দ্র দে বলেন, “বিপিএল তালিকাভুক্ত গ্রাহকদের মধ্যে কারা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খরার চাল পাবেন, তা ঠিক করতে এবং সুষ্ঠুভাবে চাল বণ্টনের জন্যই সর্বদল বৈঠক ডাকতে বলেছিলাম পঞ্চায়েত প্রধানকে। যাতে সর্বসম্মতিক্রমে চাল প্রাপকদের একটি স্বচ্ছ তালিকা তৈরি করা যায়। শুনেছি বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকবেন, সেই নিয়ে দু’পক্ষে অশান্তি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওই বৈঠক স্থগিত রাখা হয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। আহত তৃণমূল কর্মীর চিকিৎসা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|