তিনটি বেহাল মাঠেই চলছে জেলা ফুটবল লিগ
মাঝ মাঠ দখলে থাকলেই নাকি মাঠ দখলে থাকে। কিন্তু সেখানে তো দাঁড়ানোই কঠিন।
কোপা আমেরিকার খেলা ভোর থেকে টিভিতে দেখে মাঠেও একটু বেশি ঘাম ঝরাচ্ছেন বহরমপুরের ফুটবলাররা। মেসি নেইমার পাতোদের মতো বল নিয়ে উঠতে গিয়ে কিন্তু পা জড়িয়ে যাচ্ছে মাঠের কাদাতেই। ডিফেন্স থেকে উড়ে আসা বল ধরে মিডফিল্ডার কোথায় পাস বাড়িয়ে নাজেহাল করে দেবে বিপক্ষকে, সেখানে পা বসে যাচ্ছে ভিজে ঘাসে। বুটের ডগায় কাদা। উইং ধরে খেলতে গেলে প্যাচপ্যাচে কাদায় সেখানেও নাজেহাল খেলোয়াড়েরা। জেলা লিগের খেলার পরে হিন্দ ক্লাবের এক ফরোয়ার্ড জানালেন, “আরে আগে তো দাঁড়াব। বল ধরব। তার পরে পাস বাড়াব কী বল ধরে এগোব। কিন্তু এই বর্ষার পরে বল পিছলে যাচ্ছে মাঠে পড়ে, নিজেও ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছি না।”
নতুন করে মাটি ফেলে মাঠ তৈরি হলেও, বহরমপুর এফইউসি ময়দান জলকাদায় বেসামাল। সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগের নিয়মিত ফুটবলার প্রভাত শেখ বলেন, “মাটি খুঁড়ে ফেলে নতুন করে মাটি ফেলে এফইউসি ময়দান তৈরি হলেও মাঠ এখনও খেলার উপযোগী হয়নি। মাঠের মাটি এখনও নরম হয়ে রয়েছে। মাঠ আরও রোল করে মাটি বসানো উচিত ছিল। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে খেলা শুরু করে দেওয়ার ফলেই ওই ঘটনা ঘটেছে। খেলা চলাকালীন ফুটবলারদের পা মাটিতে বসে যাচ্ছে। মাঠের অনেক জায়গায় জলও দাঁড়িয়ে থাকছে। সেদিক থেকে ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানের বিকল্প নেই।”
ফুটবলার সুমন সাহা বলেন, “এফইউসি মাঠের মাঝে ক্রিকেটের পিচ রয়েছে। সাধারণত পিচ তৈরিতে এঁটেল মাটি ব্যবহার হয়। সেই মাটিই জল-কাদায় এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গিয়েছে। ফলে মিডফিল্ডারদের বল ধরতে খুব অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে। গোলপোস্টের নিচের হালও বলার মত নয়। এছাড়া মাঠ ছোট হওয়ার কারণে খেলতেও অসুবিধা হচ্ছে।”
বহরমপুর স্টেডিয়াম ময়দানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে নিয়োগ চলছে বলে মুর্শিদাবাদ জেলা সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগের খেলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বহরমপুরের এফইউসি ময়দানে। চাকরি প্রার্থীদের দাপাদাপিতে স্টেডিয়ামের মূল মাঠের দৈন্যদশা। নতুন করে মাঠ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সেখানে খেলার পরিবেশ নেই। স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ অবশ্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় মাঠ সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
লিগের আয়োজক মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। আয়োজক সংস্থার পক্ষে তরুণ দত্ত বলেন, “এফইউসি মাঠে নিয়মিত ঐতিহ্যপূর্ণ হুইলার শিল্ড নিয়মিত খেলা হত। ফলে মাঠ মোটেই ছোট নয়। তবে ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে লিগের ম্যাচ করার জন্য জেলাপ্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রশাসনের অনুমোদন দেয়নি। এছাড়া খোলা মাঠে ম্যাচ খেলার অনেক অসুবিধা। সেদিক থেকে ঘেরা এফইউসি মাঠে নিরাপত্তার অভাব নেই।”
বহরমপুরে আসলে হাতে গোনা কয়েকটি মাঠ রয়েছে, যেখানে ফুটবলাররা নিয়মিত অনুশীলন করে থাকেন। তার মধ্যে হিন্দ ক্লাব, ব্রজভূষণ, ভ্রাতৃসংঘ ও ভেটারেন্স ক্লাব ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে, অভ্যুদয় সংঘ ওয়াইএমএ ময়দানে, এফইউসি এবং বালার্ক সংঘ এফইউসি ময়দানে, শিবাজি অ্যাথলেটিক ক্লাব কৃষ্ণনাথ কলেজ মাঠে, চিত্তরঞ্জন ক্লাব ইউসিটিসি মাঠে অনুশীলন করে। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাঠগুলির অবস্থা ভাল নয়। হিন্দ ক্লাবের অন্যতম কর্তা শেখর রায়ের অভিযোগ, “পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে জল-কাদায় বহরমপুর স্টেডিয়ামের মূল মাঠের অবস্থা দফারফা হয়ে গিয়েছে।”
ওয়াইএমএ ময়দান জল-কাদায় মাখামাখি। তার উপরে সাইকেল-মোটরবাইক যাতায়াত করার ফলে মাঠ খেলার অনুপযুক্ত। একই অবস্থা কৃষ্ণনাথ কলেজ মাঠেরও।
Previous Story Murshidabad Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.