৯ বছরেও সংস্কার হয়নি রাস্তা, বাস বন্ধ
রাস্তা তৈরি হওয়ার নয় বছরেও সংস্কার হয়নি। আর তাতেই বেহাল হয়ে পড়েছে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, সেটি হল বড়ঞা ব্লক এলাকার খরজুনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কান্দি সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের ধারথোল হাজিপুর যাওয়ার রাস্তা। যদিও ওই রাস্তাটি মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অধীনে আছে মাত্র সাত কিলোমিটার। বাকিটা আছে বীরভূম জেলাপরিষদের অধীনে। বর্তমানে ওই রাস্তাটি বীরভূম জেলাপরিষদের অধীনে থাকা অংশটুকু সংস্কার করেছে। কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অধীনে থাকা সাত কিলোমিটার রাস্তাটির এমন দশা যে ওই রুটের সমস্ত বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
কান্দি সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের ধারথোল ওই রাস্তাটির পিচের চাদর উঠে গিয়েছে শুধু খানাখন্দে পরিণত হয়েছেন এমন নয়। অধিকাংশ রাস্তাটি পিচের চাদরের চিহ্ন থাকার নিদর্শনটুকু নেই। বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে যা দেখে মনে হয় ছোটখাটো ডোবা হয়েছে। যদিও ওই রাস্তা ব্যবহার করে বীরভূম জেলা ও প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের পাহাড় থেকে রাস্তা তৈরির লাল মোরাম, নির্মাণ কাজের পাথর আসে মুশির্দাবাদ জেলায়। ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক চালকরা পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে আসার সময় নিজেরাই রাস্তার পাশের শক্তমাটি কেটে গর্তে দিয়ে অতি সাবধানে যাতায়াত করেন। এমনই এক ট্রাক চালক নকুল বাড়িকের আক্ষেপ, “জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যে কোনও মুহূর্তে বড় বিপদ হতে পারে জেনেও বাধ্য হয়ে ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে হয়। সব মহলে জানানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের কথা আর ক’জন বোঝে বলুন।”
হাসপাতাল যেতে হয় এই রাস্তা ধরেই।-- গৌতম প্রামাণিক।
এই রাস্তা দিয়ে যে শুধু পণ্যবাহী যান চলাফেরা করে এমন নয়। রাস্তার আশেপাশে বড়ঞা ব্লকের কল্যাণপুর ১ ও ২ নং কুনিয়া ও খরজুনা চারটি অঞ্চলের প্রায় ৩০টি গ্রামের বাসিন্দারা ওই রাস্তা ব্যবহার করে। রাজারহাট থেকে শুরু করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য কলেজ ও হাসপাতালে যেতে হয় ওই সাত কিলোমিটার ভাঙাচোরা রাস্তাটি অতিক্রম করে। ওই রাস্তা দিয়ে বহরমপুর, কান্দি, কাটোয়া, বর্ধমান রুটের প্রায় সাতটি বাস চলত। কিন্তু গত ২৫ দিন ধরে সেগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অবৈধ তিন চাকা যান ‘লছিমন’ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এ বার রাতবিরেতে রোগ দেখা দিলে গাড়ি তো পাওয়া যায় না। তক্তায় চাপিয়ে চার জনে ঘাড়ে নিয়ে ছুটতে হয় ওই কান্দি সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের ধারে। সেখানে থেকে গাড়িতে করে বড়ঞা অথবা কান্দি হাসপাতালে ছুটতে হয়। ওই এলাকায় অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিকাজের উপর নির্ভর করেন। এলাকার বাসিন্দা কালাচাঁদ শেখ, জামেলা বিবিরা বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে রাস্তাটির অবস্থা খারাপ। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায়। যতক্ষণ না বাড়ি ফেরে চিন্তামুক্ত হতে পারি না। বহু জায়গায় রাস্তাটি মেরামত করার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।”
ওই রাস্তাটি ছাড়াও বিকল্প একটি রাস্তা আছে। সেটা খরজুনা থেকে কোটাশুরমোর হয়ে হাজিপুরে যাওয়া যায়। কিন্তু তার দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার। আর সনকপুর হয়ে রাস্তাটি মাত্র ১৪ কিলোমিটার। ঘুর পথটি খানাখন্দে ভর্তি। ফলে পণ্যবাহী ট্রাকগুলি সব ওই সনকপুর (বীরভূম জেলার শেষ সীমান্ত) হয়ে যাতায়াত করে। কান্দি মহকুমা ট্রাক মালিক সংগঠনের সম্পাদক মহম্মদ ফুলু মিঞা বলেন, ‘‘আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বহু বার জেলাপরিষদের সভাধিপতিকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ কান্দি যাত্রী পরিবহণ মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক তপন ঘোষ বলেন, ‘‘যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে ভেবেই রাস্তায় বাস বন্ধ করা হয়েছে। যাত্রীরাও বলেছি রাস্তা মেরামত না হলে বাস চালাতে হবে না। জেলাপরিষদ কেন মেরামত করছে না জানি না।’’ ওই রাস্তাটি যে এতখানি বিপজ্জনক অবস্থায় আছে সে তথ্য অবশ্য জানা নেই বলে দাবি করেছেন মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি পূর্ণিমা দাস। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাজেট পেশ করা যায়নি। ফলে অর্থের সঙ্কট আছে। তা ছাড়া ওই রাস্তাটি খারাপ হয়ে আছে জানি না। আমি খোঁজ নেব।’’
First Page Murshidabad Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.