দক্ষিণ কলকাতা
বেহাল সরণি
সংযোগে কাঁটা
বিভিন্ন জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে কার্যত খন্দপথে পরিণত হয়েছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড এবং ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের সংযোগকারী রাস্তাটি। গড়িয়া, সোনারপুর এবং দক্ষিণ শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে শহরের প্রাণকেন্দ্রের যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে এই রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা বহু দিন ধরেই বেহাল অবস্থায় রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তার দু’পাশের দখলদারির সমস্যা দীর্ঘ দিনের।

চওড়া রাস্তার দু’দিকে যে ফুটপাথ রয়েছে তার বিভিন্ন জায়গায় গজিয়ে উঠেছে দোকান। রাস্তার পাশে যেখানে সেখানে দিনের পর দিন ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখা হয়। ফুটপাথের উপরে কয়েকটি জায়গায় ম্যানহোলের ঢাকনাও নেই। ফলে পথচারীরা রীতিমতো ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হন।
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের সঙ্গে দক্ষিণ শহরতলির সংযোগকারী এই রাস্তাটির দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি হচ্ছে ত্রিগুণা সেন সরণি এবং অন্যটি মানবেন্দ্রনাথ রায় সরণি। যাদবপুর থানার মোড় থেকে সাঁফুই পাড়ার কাছে ত্রিগুণা সেন সরণি গিয়ে মিশছে মানবেন্দ্রনাথ রায় সরণিতে। এর পরে মানবেন্দ্রনাথ রায় সরণি গিয়ে শেষ হচ্ছে বাইপাসের কালিকাপুর মোড়ে।
গড়িয়া, সোনারপুর এবং দক্ষিণ শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকা ছাড়াও সেলিমপুর, নস্করপাড়া, শহিদনগর, গাঙ্গুলিপুকুর, ঢাকুরিয়া ইস্ট রোড, আর্য বিদ্যালয় রোড, বৈদ্য পাড়া, ব্যাঙ্ক প্লট, সাঁফুই পাড়া প্রিন্স পার্ক, পূর্বাচল, কালিকাপুর এবং হালতুর একাংশের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন যাতায়াতও এই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক পশলা বৃষ্টি হলেই কালিকাপুরের কাছে যেখানে রাস্তাটি বাইপাসে মিশছে সেই অংশে জল জমে যায়। পরিস্থিতি এমন হয় যে জল না সরা পর্যন্ত রাস্তার এই অংশ দিয়ে যাতায়াত করা যায় না।
সমস্যার কথা স্বীকার করে ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিআইয়ের মধুছন্দা দেব বলেন, “এক বার আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে এই রাস্তা মেরামতির ব্যবস্থা করেছিলাম। তার পরে আবার খারাপ হয়ে যায়। এ বারও ব্যবস্থা করব।”
১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান এবং ১০৬ নম্বরের কাউন্সিলর তৃণমূলের দীপু দাসঠাকুর বললেন, “রাস্তাগুলো ঠিক করার জন্য পূর্ত দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছি। তবে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভাগগুলোকে এখনও এক ছাতার নীচে আনা যায়নি। তাই এখনই কিছু করা যাবে না।”
দক্ষিণ শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে ইএম বাইপাসের যোগাযোগ সহজতর করার জন্যই এই সংযোগকারী রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, প্রতি দিন অসংখ্য যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। এলাকার রঞ্জন গুহ বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে সহজেই বাইপাসে যাওয়া যায়। তাই এলাকার অনেক মানুষের কাছে এই রাস্তাটির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু এই রকম একটি ব্যস্ত রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইপাসের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ। এই সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড এবং ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের সংযোগকারী রাস্তাটির সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। এরই মধ্যে কিছু অংশে মেরামতির কাজও হয়েছে। অবশিষ্ট অংশের কাজ পুজোর আগেই হয়ে যাবে বলে আশা করছি।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল

Previous Story

Kolkata

Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.