পূর্ব কলকাতা
বেলেঘাটা খাল
অবহেলার প্রবাহ
বেলেঘাটার বাসিন্দা প্রশান্ত রায়ের কথায়: “গত বছরও বেলেঘাটা খালের সংস্কার নিয়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্তরে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও কোনও রকম তৎপরতা চোখে পড়ল না।” খালপাড়ের দিকেই থাকেন বেলেঘাটার বাসিন্দা সুস্মিতা মালাকার। তিনি বলেন, “খালপাড়ে বেআইনি দখলদারি ঠেকাতে বেশ কয়েক বছর আগে দেখলাম কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হল। কিন্তু কিছু দিন বাদেই যে-কে-সেই। কচুরিপানায় খালের বড় অংশ ভরা।
কোথাও আবার খালের দু’পার ও মাঝখানে প্লাস্টিকের স্তূপ।”
বেলেঘাটা খালপাড় কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর বরোর অন্তর্গত। সেই বরোতেও সম্প্রতি রাজনৈতিক পালাবদল হয়েছে। ৩ নম্বর বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিপিএমের সমীর চক্রবর্তী বলেছিলেন, সংস্কার করা হবে। কলকাতা পুরসভার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা চলছে সেচ দফতরের সঙ্গেও।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬-’০৭ আর্থিক বছর থেকে আজও এই খালের সংস্কার হয়নি। চিংড়িহাটা থেকে এই খাল গিয়ে পড়েছে চিৎপুর খালে। খালের মধ্যে দু’পাশের এলাকার বর্জ্য পদার্থ ছাড়াও কলকারখানার বর্জ্যও এসে মেশে। কেন এই সংস্কারের কাজ এত দিন হয়নি সে প্রশ্নের কোনও সুনির্দিষ্ট জবাব কিংবা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়নি। সেচ দফতরের ক্যানাল ডিভিশনের বর্তমান এগজিকিউটিভ অফিসার মানস চক্রবর্তী শুধু বলেন, “বেলেঘাটা খাল সংস্কার নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি।”
অবশ্য বাসিন্দাদের অভিযোগ সমর্থন করে ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের স্বপন সমাদ্দার বলেন, “বাম সরকারের দীর্ঘ দিনের উদাসীনতার ফল। খালের অবস্থা বেহাল। ক্ষমতায় আসার পরে খাল নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। পুরসভা ও সেচ দফতরের যৌথ উদ্যোগে সংস্কারের কাজ হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে।” খালপাড়ের দু’দিকে দখলদারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এক বার সরানো হয়েছিল। কিন্তু ফের দখল হয়েছে। উন্নয়নের কাজ দ্রুত শুরু হবে। সেই মতো দখলদারি নিয়ে প্রয়োজনে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মেয়র বলেন, “ইতিমধ্যেই জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের আওতায় ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তা দিয়ে এলাকার খাল সংস্কার হবে।”

ছবি অর্কপ্রভ ঘোষ
Previous Story

Kolkata

Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.