সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা নিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়নের এক নতুন পরিবেশ তৈরি করাই ছিল রাজ্য সরকারের লক্ষ্য। তাতে সামিল হতে চেয়েছিল টাটা মোটরস। শুক্রবার, সিঙ্গুর জমি অধিগ্রহণ মামলায় বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে এ ভাবেই সওয়াল করলেন টাটা মোটরস-এর আইনজীবী সমরাদিত্য পাল।
পাশাপাশি সমরাদিত্যবাবু এ-ও জানান, ন্যানো প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে টাটা মোটরস-এর জমির লিজ সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা আছে। চুক্তির একটি ধারায় রয়েছে, প্রকল্পের আর্থিক ক্ষতি হলে (জমি সংক্রান্ত কারণে) রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। ‘ইনডেমনিটি ক্লজ’ বলে যা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার টাটা মোটরস-এর পেশ করা সংশোধনী আবেদনের সওয়াল-জবাব থাকলেও, রাজ্য সরকার তার কোনও বিরোধিতা না করায় সেটি সে দিনই গৃহীত হয়ে যায় এবং তা জুড়ে শুক্রবার থেকে ফের শুরু হয়েছে সিঙ্গুরের মূল মামলার শুনানি।
এ দিন সিঙ্গুর মামলার শুনানির সময় সমরাদিত্যবাবু জানান, জনস্বার্থমূলক প্রকল্প বলেই সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ করেছিল রাজ্য সরকার। ন্যানো প্রকল্পকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে নতুন কর্মসংস্থান এবং সিঙ্গুরের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকেই জমি অধিগ্রহণের মূল কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ করে লিজ চুক্তির মাধ্যমে টাটা মোটরস-এর হাতে তা তুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সওয়ালের মাঝে বিচারপতির সামনে সমরাদিত্যবাবু কিছু অংশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, হিমাচলপ্রদেশ বা উত্তরাঞ্চলের মতো রাজ্যগুলি টাটাদের লোভনীয় আর্থিক ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ওই রাজ্যগুলির মতোই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ন্যানো গাড়ি প্রকল্পের জন্য উৎপাদন শুল্ক, বিক্রয় করে ছাড়-সহ সামান্য সুদে ঋ
ণ দিতেও রাজি হয়। ২০০৭-এ সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে আদালতে প্রথম জনস্বার্থমূলক মামলা হয়। ন্যানো প্রকল্পের ক্ষেত্রে ওই ঘটনাকে প্রথম ধাক্কা বলেই সমরাদিত্যবাবু এ দিন ইঙ্গিত করেন।
এ দিন খুব অল্প সময়ের জন্যই শুনানি চলে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সারাক্ষণ উপস্থিত থাকলেও, অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র এ দিন এজলাসে বেশি ক্ষণ থাকতে পারেননি। সোমবার সকাল থেকেই ফের এই মামলার শুনানি
শুরু হবে। ওই দিনও টাটা মোটরস-এর হয়ে সওয়াল করবেন সমরাদিত্যবাবু। |