|
|
|
|
কালকা বেলাইনে কি নাশকতা, দেখতে বলল ‘র’ |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি |
কালকা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার পিছনে নাশকতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে তদন্তকারী কমিটিকে নির্দেশ দিল দেশের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’।
প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনায় নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিল রেল মন্ত্রক। সে সময়ে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে পয়েন্ট অথবা ইঞ্জিনের ত্রুটিকেই দায়ী করছিলেন রেল কর্তারা। কিন্তু মন্ত্রক সূত্রের খবর, যে ভাবে একের পর এক ওয়াপ-৭ ইঞ্জিনে দুর্ঘটনা ঘটছে, তাতে এর পিছনে কোনও নাশকতার ছক রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে রেলের মুখ্য নিরাপত্তা কমিশনার প্রশান্তকুমারকে নির্দেশ দিয়েছে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইং (র)। সম্প্রতি যে ক’টি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়েছে বা বেলাইন হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশতেই ওয়াপ-৭ ইঞ্জিন ছিল। রেল মন্ত্রক এত দিন পর্যন্ত ওয়াপ-৭ ইঞ্জিনে কোনও গন্ডগোল নেই বলে সার্টিফিকেট দিলেও ‘র’-এর নির্দেশ আসার পর নড়েচড়ে বসেছে। ওই ইঞ্জিনটিকে অবশ্য ইতিমধ্যেই ফজলগঞ্জ লোকো শেডে নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে ইঞ্জিনের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। বিমানের মতোই এই ইঞ্জিনগুলোতে ব্ল্যাকবক্স থাকে। যার মধ্যে ট্রেন চলাচল সম্পর্কিত সব তথ্য পরপর জমা হতে থাকে। মন্ত্রক জানিয়েছে, এখন ওই তথ্য বিশ্লেষণেরই কাজ চলছে। মালওঁয়া স্টেশনমাস্টার এবং চালকের মধ্যে ওয়াকিটকিতে যে কথা হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখছে মন্ত্রক। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা যাচ্ছে, কালকার ইঞ্জিনের নীচের অংশে (আন্ডার ক্যারেজ) যেখানে চাকাগুলো রয়েছে, সেগুলো কোনও ভাবে ‘ব্রেক বাইন্ডিং’ হয়ে গিয়ে আপৎকালীন ব্রেক লেগে যায়। এর পিছনে ইঞ্জিনের কোনও যন্ত্রাংশ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না রেল মন্ত্রক। হঠাৎ চাকা জ্যাম হয়ে ইঞ্জিনে ব্রেক লাগলেও সেই ব্রেক অন্য কামরায় প্রয়োগ হওয়ার আগেই ট্রেনটি লাইনচু্যুত হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
এখন র’-এর নির্দেশের পরে যন্ত্রাংশ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টির উপর জোর দিতে চাইছেন তদন্তকারী অফিসাররা। মন্ত্রক জানিয়েছে, গোটা ইঞ্জিনের প্রতিটি যন্ত্রাংশ আলাদা করে খুলে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি কালকার দুর্ঘটনার পরে রেল বোর্ডের তরফে রেলের সব জেনারেল ম্যানেজারদের চিঠি লিখে লাইন পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা, ইঞ্জিনগুলোর নিয়মিত ভিত্তিতে রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি দেখতে বলা তো হয়েইছে, উপরন্তু লোকো শেডগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী থাকছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তবে ‘র’ ইঞ্জিনে কারসাজি করে নাশকতা ঘটানোর যে সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বলেছে, রেল মন্ত্রকের অফিসারদের একাংশ আবার সেই তত্ত্ব মানতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, নাশকতা করার ইচ্ছা থাকলে সংগঠনগুলো লাইনে বোমা রাখবে বা লাইনের ফিসপ্লেট খুলে নেবে। সেজন্য আলাদা করে ইঞ্জিনে কারসাজি করার ঝুঁকি নিতে যাবে কেন? এক কর্তার কথায়, “ওই ট্রেনটি ততক্ষণে প্রায় ১৭ ঘণ্টা চলছিল। অতটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে আলাদা করে নাশকতার তত্ত্ব কতটা খাটবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।” |
|
|
|
|
|