|
|
|
|
গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প |
রক্ষণাবেক্ষণে পুরসভা, তবে বেতন দেবে রাজ্যই |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
বহু দিন ধরেই গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প কলকাতা পুরসভার অধীনে আনতে চাইছিলেন মেয়র। রাজি হয়নি তৎকালীন সরকার। বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল বলেছিল, তারা ক্ষমতায় এলে গার্ডেনরিচ যাবে পুরসভার অধীনেই। প্রতিশ্রুতি মতোই শুক্রবার ওই প্রকল্প হস্তান্তর করা হয় পুরসভাকে। তবে শুধু রক্ষণাবেক্ষণেরই ভার নিয়েছে পুরসভা। কর্মীদের আর্থিক দায়ভার থাকছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন অথরিটি (কেএমডব্লিউএসএ)-এর নিয়ন্ত্রণেই। এর আগে বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি প্রকল্পটিও তুলে দেওয়া হয় পুরসভার হাতে। সেখানেও কেএমডিএ নিযুক্ত কর্মীদের বেতন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষই দেন বলে সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
এ দিন গার্ডেনরিচ প্রকল্প মেয়রের হাতে তুলে দেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “দক্ষিণ কলকাতা ও লাগোয়া অংশে পানীয় জল সরবরাহ করতেই হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এখানে যে কর্মীরা আছেন, তাঁদের বেতন ও চাকরির অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেবে রাজ্য সরকারই। পরে এই প্রকল্পে কর্মরত কিছু ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠানো হবে অন্য প্রকল্পে। কোনও কর্মীই ছাঁটাই হবেন না।” এই মুহূর্তে এখানে কর্মী ১২৯ জন।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্বে কলকাতা পুরসভা। অথচ মাঝেমধ্যেই গার্ডেনরিচের পাম্প খারাপ হয়ে অথবা জল সরবরাহের লাইনে ফাটল ধরে সরবরাহ ব্যাহত হয়। পুরসভা-কেএমডব্লিউএসএ-র চাপান-উতোরও চলে। ফলে অসুবিধা হয় নাগরিকদেরই। মেয়র বলেন, “জলপ্রকল্পের কাজ একটি নির্দিষ্ট সংস্থা দেখলে এমন অসুবিধা অনেকটাই কমে। গত সরকারকে তাই প্রকল্পটি পুরসভাকে হস্তান্তরের জন্য বলা হয়েছিল। তাঁরা কথা শোনেননি। নতুন সরকার এসেই এই প্রকল্প পুরসভাকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। বজবজ, মহেশতলা ও পূজালিতে গার্ডেনরিচ থেকে দৈনিক যে পরিমাণ জল সরবরাহ হয়, তা বজায় থাকবে।”
গার্ডেনরিচ প্রকল্পে অপরিশোধিত জল তোলার দু’টি জেটি। হুগলি নদীর জলতল নামলে প্রায়ই পরিকাঠামোজনিত কারণে পুরনো জেটি থেকে জল তোলার সমস্যা হয়। টান পড়ে সরবরাহে। এ ছাড়া, অপরিশোধিত জল তোলার মোট আটটি পাম্পের মধ্যে তিনটি পুরনো। সেগুলিও দ্রুত বদলানো প্রয়োজন।
শোভনবাবু জানান, এই মুহূর্তে গার্ডেনরিচের দৈনিক ১২ কোটি গ্যালন জল সরবরাহের ক্ষমতা আছে। পুরসভা ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচে দৈনিক দেড় কোটি গ্যালন জল উৎপাদনের জন্য আর একটি জলপ্রকল্প করছে। এ ছাড়াও গড়া হচ্ছে আধুনিক মানের একটি জেটি। তার কাজ শেষ হলে প্রত্যহ বাড়তি দেড় কোটি গ্যালন জল তোলা যাবে। ফলে গার্ডেনরিচের জল উৎপাদন ক্ষমতা ১২ কোটি গ্যালন থেকে বেড়ে সাড়ে ১৩ কোটি গ্যালনে দাঁড়াবে। এই জেটিকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা হবে বলে মেয়র জানান। গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প হস্তান্তর হওয়ার ফলে যে বাড়তি ২৩৩ একর জমি মিলেছে, সেখানেও ১০ কোটি গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন জলপ্রকল্প হবে বলেও জানান তিনি। |
|
|
|
|
|