কালকা দুর্ঘটনায় মৃত দুই ব্যক্তির দেহ এসে পৌঁছল বর্ধমান স্টেশনে। এঁদের নাম যথাক্রমে উজ্জ্বল বাউরি (২৯) ও শেখ মাসাদুল (৩০)। তাঁরা দু’জনেই ছিলেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের এস-২ কামরার যাত্রী। প্রথম জনের বাড়ি বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়রের হাটকৃষ্ণনগর গ্রামে। অপর জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার মাদারহাটি গ্রামে। উজ্জ্বলবাবু ছিলেন স্থলবাহিনীর ল্যান্স নায়ের। তিনি কাশ্মীরে বহাল ছিলেন। ছুটি কাটিয়ে তিনি দেরাদুনে যাচ্ছিলেন সেনাবাহিনীর অপর একটি ইউনিটে যোগ দিতে। বর্ধমান স্টেশন থেকেই ওই ট্রেনে ওঠেন তিনি। শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ ডাউন দিল্লি-হাওড়া রাজাধানী এক্সপ্রেসে তাঁর দেহ নিয়ে বর্ধমানের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামেন তাঁর আত্মীয়েরা। তিনি সেনাবাহিনীর কর্মী বলে পানাগড় সেনা ছাউনির কিছু লোক এসে তাঁর কফিন নামিয়ে নিয়ে যান। সন্ধ্যায় তাঁকে বাঁকুড়ার ওই গ্রামে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে বলে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে । |
এ দিন দুপুর দুটো নাগাদ ডাউন বিকানির-কলকাতা এক্সপ্রেস থেকে শেখ মাসাদুলের দেহ বর্ধমানের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামানো হয়। মাসাদুলের কাকা বাবর আলি বলেন, “আমার ভাইপো সৌদি আরবের জেড্ডাতে এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত। বছরে এক বারই ও দেশে ফিরতে পারে। দু’মাসের ছুটি নিয়ে ও এ বার এসেছিল। ছুটি কাটিয়ে দিল্লি যাচ্ছিল। সেখান থেকে বিমানে জেড্ডায় যেত।” এই যুবকের আয়েই সংসার চলত বলে জানান বাবর। তিনি আরও বলেন, “ওর সংসারটার যে কী হবে তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।”
বাবর বলেন, “ওর নাম রিজার্ভেশন টিকিটে লেখা ছিল সেখ মুদাস্সর বলে। কিন্তু ওর পিএনআর নম্বর রেল ও ওর কাছে থাকা নথিতে একই হওয়ায় রেলের তরফে শেষ পর্যন্ত আমাদের হাতে দেহটি তুলে দেওয়া হয়েছে।” মাসাদুলের বড় ভাই আলতাব সেখ বলেন, “আমরা ১০ তারিখ সন্ধ্যাতেই হাওড়া থেকে রিলেটিভ স্পেসালে চড়ি। ফতেপুর আর কানপুর হাসপাতালের মর্গে বারংবার গিয়েছি। শেষে ইলাহবাদের নেহেরু হাসপাতালের ফুলে ওঠা দেহটিকে পায়ের লম্বা নখ দেখে শনাক্ত করি।”
স্টেশন ম্যানেজার অসীমকুমার রায় জানান, এ দিন আহত তিন যাত্রীও ফিরেছেন। তাঁর কথায়, “এই তিন জন ফিরেছেন ডাউন তুফান মেলে। এই তিন জন হলেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার লোকনাথপুরের তাজির আলি ও শেখ মহসিন। অপর জন হলেন বর্ধমানের খাঞ্জিগ্রামে আজহার আলি।” |