|
|
|
|
আসানসোল আদালত |
পুলিশের হাতে কচুরি, ছুটে পালাল আসামিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
বটের নীচে ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া চা-কচুরির দোকান।
মামলার শেষে দুই আসামিকে হাজতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগে নিয়ে সেখানেই গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন প্রৌঢ় কনস্টেবল।
বন্দিদের কোমরে দড়ি ছিল না। হাতে ছিল না হাতকড়া। তাদের কোমরের কাছে প্যান্ট মুচড়ে ধরে ছিলেন কনস্টেবল। কিন্তু সে ভাবে কী করেই বা তিনি চা-কচুরি খান?
পরিস্থিতির সুযোগ নেয় ডাকাতির দুই আসামি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তারা কনস্টেবলকে বলে, ‘ছোড় না ইয়ার, খানে দে না, হম থোড়ি ভাগেঙ্গে!’ বিশ্বাস করে ‘বজ্র আঁটুনি’ আলগা করেন প্রৌঢ়। নিজেও কচুরি চেয়ে নেন। আরাম করে কচুরিতে দু’চার কামড় দেয় দুই মক্কেল... তার পরেই দে দৌড়!
শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ আসানসোল আদালত চত্বরে আচমকা ঘটনাটি ঘটে যায়। পিছু ধাওয়া করেও রাজু শেখ ও আবদুল গফফর নামে ওই দুই আসামিকে আর ধরতে পারেননি কনস্টেবল দীপক সাহা। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু রাত পর্যন্ত তাদের আর হদিস মেলেনি।
পুলিশ জানায়, গত বছর ৮ অক্টোবর রানিগঞ্জ থেকে ডাকাতির অভিযোগে সাত জনকে ধরা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে তাদের আসানসোল আদালতের অতিরিক্ত ২ নম্বর দায়রা বিচারকের এজলাসে হাজির করানো হয়। শুনানির পরে তাদের আদালতের লকআপে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দীপকবাবু। আর ক’দিন পরে তাঁর অবসর। বহু সময়েই বিচারাধীন বন্দিদের নিয়ে চায়ের দোকানে দাঁড়ান পুলিশকর্মীরা। তিনিও তেমনই দাঁড়িয়েছিলেন। ভাবেননি, এমন কিছু ঘটে যেতে পারে। |
|
সেই চা-কচুরির দোকান। নিজস্ব চিত্র। |
আদালতে পুলিশ লকআপের দায়িত্বে থাকা লখিন্দর মণ্ডল জানান, সকালে অন্য আসামিদের সঙ্গে রাজু আর আব্দুলকেও আসানসোল সংশোধনাগার থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিছু ক্ষণ কোর্ট লকআপে রেখে তাদের এজলাসে পাঠানো হয়। শুনানির শেষে সেখানেই তাদের ফিরিয়ে আনার কথা ছিল পুলিশের। কিন্তু দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মী তা পারেননি। ডাকাতির মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী শিবশংকর চট্টোপাধ্যায় জানান, শুনানির শেষেই দুই অভিযুক্ত পালিয়েছে।
আসানসোল আদালত চত্বরে পুলিশের হাত ফস্কে আসামি পালানোর ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। বরং মাঝে-মাঝেই একই ঘটনা ঘটে এবং প্রমাণ হয়, আগের ঘটনাগুলি থেকে পুলিশ শিক্ষা নেয়নি। আদালতের আইনজীবীদের একাংশও মনে করেন, আসামিদের আনা-নেওয়ার জন্য যতটা সতর্কতা প্রয়োজন, বহু ক্ষেত্রেই পুলিশ তার তোয়াক্কা করে না। এ সব ঘটনা তারই ফলশ্রুতি। বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “আমি বিস্তারিত জানি না। ডিএসপি (সদর)-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” আসানসোলের ডিএসপি (সদর) চন্দ্রশেখর বর্ধনও জানান, তিনিও বিস্তারিত কিছু জানেন না। পুলিশ তদন্তে নেমেছে। |
|
|
|
|
|