|
|
|
|
নামের মিলের সুযোগে ওসি সাজতেন অভিযুক্ত এসআই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দু’জনেই গৌতম। এক জন বাগুইআটি থানার বড়বাবু গৌতম মিত্র। অন্য জন ওই থানারই সাব-ইনস্পেক্টর গৌতম বসু। অভিযোগ, এক নামের সুযোগ নিয়েই বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে বড়বাবু বলে পরিচয় দিতেন বসু গৌতম। আর এই গৌতম বসুর বিরুদ্ধেই অসহযোগিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন কলকাতা শহরতলির বাসিন্দা প্রতারিত ও ধর্ষিত এক ছাত্রী।
উত্তর ২৪ পরগনার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জা বৃহস্পতিবার বলেন, “নাম এক হওয়ার সুযোগ নিয়ে গৌতম বসু বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে ওসি বলে পরিচয় দিতেন।” এসআই গৌতমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রকম দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে তাঁকে সন্দেশখালিতে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এখনও সেখানে যোগ দেননি।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জানান, যে-মডেলিং সংস্থার নামে তরুণীটির কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল, সেটি ভুয়ো। আসলে একটি চক্রের হাতে প্রতারিত হয়েছেন ওই তরুণী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সেই চক্রের চাঁই এবং ভুয়ো মডেলিং সংস্থার কর্তা প্রসেনজিৎ নাগচৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রের অন্যদের খোঁজ চলছে।
মাস ছয়েক আগে মডেলিংয়ের জন্য কলকাতার ওই ভুয়ো সংস্থার কর্তার কাছে কয়েক লক্ষ টাকা জমা দিয়ে প্রতারিত ও ধর্ষিত হন ওই তরুণী। বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানান তিনি। ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার গৌতম বসু উল্টে অভিযুক্তের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামলাটিকে ‘ঝুলিয়ে’ রাখেন বলে মঙ্গলবার ওই তরুণী ফের অভিযোগ জানান। সে-দিনই প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগে মধ্যমগ্রাম থেকে প্রসেনজিৎকে গ্রেফতার করা হয় । বুধবার তাকে বারাসত আদালতে তোলা হয়।
প্রসেনজিৎকে জেরা করে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। যে-মডেলিং সংস্থার নামে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, তা-ও ভুয়ো বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই সংস্থার কাগজপত্র আটক করা হয়েছে। মডেলিংয়ের চুক্তি এবং ছবি তোলার জন্য প্রসেনজিৎ তরুণীটির কাছ থেকে দু’লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই তরুণী থানায় জানান, ধর্ষণের পরে প্রসেনজিৎ তাঁকে ৮৮ হাজার টাকার একটি ‘চেক’ দিয়েছিল এবং পরে সেটি ‘বাউন্স’ করে। সেই চেকের সইয়ের সঙ্গে প্রসেনজিতের হাতের লেখার মিল রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, মামলা ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য সে যে এসআই গৌতম বসুকে টাকা দিয়েছে, জেরায় তা স্বীকার করেছে প্রসেনজিৎ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই তরুণী একা নন। প্রসেনজিতের ভুয়ো সংস্থার কাছে একই ভাবে আরও কয়েক জন তরুণী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রসেনজিতের মোবাইল ঘেঁটে ওই সব তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান বাগুইআটি থানার ওসি গৌতম মিত্র। পাশাপাশি এই চক্রে জড়িত অন্যদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। |
|
|
|
|
|