ধুঁকছে রাজ্য সরকারি সংস্থা ইলেকট্রো মেডিক্যাল
ত দিন মাছের তেলে মাছ ভাজা চলছিল। কার্যকরী মূলধনের অভাবে বরাতের টাকা দিয়েই কেনা হচ্ছিল নতুন বরাতের পণ্য। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলির অনিয়মিত টাকা মেটানোর কারণে সেই অর্থেও টান পড়ছে। যা আসছে, তার বেশির ভাগটাই চলে যাচ্ছে বেতন দিতে। আর এই চক্রব্যূহে পড়ে নাভিশ্বাস উঠেছে বিধান রায়ের আমলে তৈরি রাজ্য সরকারি সংস্থা ইলেকট্রো মেডিক্যাল অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর। কর্মীদের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে সংস্থার টিকে থাকাই দায় হবে।
বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্ম সরবরাহ করে ইলেকট্রো মেডিক্যাল অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রিজ। নিজস্ব উৎপাদন বন্ধ। তাই ফুজি এবং কোডাক-এর ফিল্মই হাসপাতালে সরবরাহ করে তারা। কিন্তু বকেয়া টাকা পড়ে রয়েছে বলে আর ধারে তাদের মাল দিতে রাজি নয় দু’টি সংস্থাই। ফলে এক্স-রে ফিল্ম কেনাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাদের পক্ষে। আর যেহেতু ইলেকট্রো মেডিক্যালের সিংহভাগ আয়ের উৎসই সরকারি হাসপাতালে ফিল্ম বিক্রি, তাই রাজ্য সরকারের কোষাগারের বেহাল দশা তাদের ব্যবসাতেও প্রভাব ফেলছে বলে সংস্থার অভিযোগ। আবার উল্টো দিকে হাসপাতাল সূত্রের দাবি, সময়ে ফিল্মের জোগান না-পাওয়ায় সরকারি নির্দেশিকার বাইরে হেঁটেও অন্যান্য সংস্থার কাছ থেকে তা কিনতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
২০১০-’১১ আর্থিক বছরেও এক্স-রে ফিল্ম বিক্রি এবং হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন-সহ বিভিন্ন যন্ত্র সারাই ও রক্ষণাবেক্ষণ করে প্রায় ৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে সংস্থাটি। যার মধ্যে ৪ কোটিই এসেছে ফিল্ম বিক্রি করে। কিন্তু এ বার টান পড়ছে সেই ব্যবসাতেও। তা ছাড়া সংস্থা সূত্রে খবর, এখানে স্থায়ী ও চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মী রয়েছেন মোট ১০৩ জন। নিরাপত্তা রক্ষী ও অন্যান্য কর্মী আছেন ৪৮ জন। সব মিলিয়ে মাসিক বেতন বাবদ খরচ ৩০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। সুতরাং শুধু কর্মীদের বেতন দিতেই বছরে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা।
কর্মীদের অভিযোগ, সংস্থার এই হাড়ির হাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই। শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র কার্যনির্বাহী সভাপতি গোপাল সাহা বলেন, “হাসপাতালের দেওয়া টাকাতেই পরবর্তী বরাতের জিনিস কেনা হত। কিন্তু এখন বেতন বা অন্যান্য খাতে সেই টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থা চালানোর জন্য কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবসায়িক পরিকল্পনাই তৈরি করছেন না।”
সরবরাহ নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার করে নিলেও বিশদে কিছু বলতে নারাজ ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজয়ভূষণ রায়। তিনি বলেন, “পুঁজির অভাব আছে। হাসপাতালগুলিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাপ্য মেটায় না। সময়ের ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় ফুজি, কোডাকও ধারে বেশি ফিল্ম দিতে রাজি নয়। সেই কারণেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা।” তবে হাসপাতালগুলির চাহিদা মতো এক্স-রে ফিল্ম সরবরাহের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই তাঁর দাবি।
সংস্থার দু’টি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে বি টি রোডের কারখানাটিতে এক্স-রে ফিল্ম এবং এক্স-রে মেশিন তৈরি হত। ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে না-পারার কারণে তা কার্যত বন্ধ। আর সল্টলেক সেক্টর ফাইভে রয়েছে আর একটি কারখানা। এখানে ‘ব্লাড ব্যাগ’ তৈরি করা হত। কর্মীদের অভিযোগ, আড়াই কোটি টাকা দিয়ে কেনা বিদেশি মেশিন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে সেখানেও। তা মেরামত করার জন্য বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই বিশাল বাজার পড়ে থাকতেও বন্ধ ব্যবসা।
First Page Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.