কোথাও তাঁরা ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন। কোথাও অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয়ে গিয়ে দলীয় কর্মী সমর্থকদের মনোবল চাঙা করার চেষ্টা করলেন। কোথাও প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করে সর্বশেষ পরিস্থিতি জেনে অন্য ওয়ার্ডের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। রবিবার দিনভর ঠিক এ ভাবেই রায়গঞ্জ পুরসভা নির্বাচন করলেন কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ও বামফ্রন্ট নেতারা। সাতসকালে নিজেদের ভোটটি দিয়ে দিনভর তাঁরা গাড়িতে চেপে ছুটে বেরিয়েছেন এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ড। কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মোটামুটি নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে রায়গঞ্জ পুরসভার নির্বাচন। এ দিন সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৩ টে পর্যন্ত ভোট নেওয়া হলেও শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন বুথে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটারদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক সুনীল দন্ডপাট বলেন, “দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পুর নির্বাচন নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়েছে। বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছেন।” ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জোট প্রার্থী বিদায়ী পুর চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্ত শহরের ২৫টি ওয়ার্ডেই ঘুরেছেন। মোহিতবাবু কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আড্ডার মেজাজে সময় কাটান। এ দিন মোহিতবাবু যে ওয়ার্ডেই গিয়েছেন সব এলাকাতেই তাঁকে ঘিরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের ভিড় ও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “রাজ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট ক্ষমতায় এসেছে। মানুষ যে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট দিয়েছেন, তা এ দিন বোঝা গিয়েছে। তাতে আশা করছি, এ বছর কংগ্রেস-তৃণমূল জোট শহরে ২৫টি ওয়ার্ডেই জয়ী হবেন।”
|
ফুটপাত বিহীন রাস্তায় ডিভাইডার বসানোয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নাগরিক মঞ্চ রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। ওই ডিভাইডার বসানোর জন্য দিনহাটা শহরের চৌপথি থেকে ফুলদিঘি পাড় পর্যন্ত মেন রোডে যাতায়াত করা ভোগান্তির কারণ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতি। দিনহাটার নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “একে রাস্তা যথেষ্ট চওড়া হয়নি। তার ওপর ফুটপাত নেই। ফলে মেন রোডের ডিভাইডার বসানো রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। গত তিন মাসে ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সব জানিয়েই পূর্ত মন্ত্রীকে সমস্যা মেটাতে আর্জি জানিয়েছি।” ক্ষোভের যৌক্তিকতা মেনে নিয়ে দিনহাটা পুর চেয়ারম্যান চন্দন ঘোষ বলেন, “আমরাই উদ্যোগ নিয়ে নানা খাত থেকে বরাদ্দ জোগাড় করে ডিভাইডার বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথম ধাপে পূর্ত দফতর বেশ কিছু অংশে ওই কাজ করেছে। ফুটপাত তৈরি হলে গেসেই সমস্যা মিটবে।”
|
বিএসএফের গুলিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে দিনহাটা থানার বাদলগির সীমান্ত এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রফিকুল মিয়াঁ (৩০)। তার বাড়ি দিনহাটার কালামাটি এলাকায়। বিএসএফের দাবি, রাতে ওই এলাকায় বেশ কিছু দুষ্কৃতী গরু পাচারের জন্য জড়ো হয়। জওয়ানরা বাধা দিতে গেলে দুষ্কৃতীরা হামলার চেষ্টা করে। ওই সময়ে এক জওয়ানের গুলিতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
|
পরিত্যক্ত স্কুল ঘরে পার্টি অফিস খোলা কেন্দ্র করে সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকদের সংঘর্ষে শনিবার রাত থেকে উত্তপ্ত দিনহাটার নয়ারহাট এলাকা। রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ গোলমাল থামাতে গিয়ে হামলাকারীদের হাতে আক্রান্ত হয়। জখম হন দুই পুলিশ কর্মী। মোট ৬ জন জখম হয়েছেন। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। শনিবার বিকেলেই পার্টি অফিস প্রশাসনের তরফে বন্ধ করা হয়। তার পরে রাতে ফের পার্টি অফিস খোলা হলে সংঘর্ষ হয় বলে কোচবিহারের পুলিশ সুপার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান। তিনি বলেন, “গোলমাল থামাতে গিয়ে আমাদের দুই কর্মী জখম হন। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে ধরা হয়েছে।” মহকুমাশাসক অগাস্টিন লেপচা বলেন, “সরকারি জমিতে পার্টি অফিস তৈরি হওয়ায় সেটি বন্ধ করা হয়। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” সংঘর্ষের জন্য দু’পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করেছে। সিপিএমের কোচবিহারের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বেণুবাদল চক্রবর্তী বলেন, “গতকাল প্রশাসন তৃণমূলের ওই পার্টি অফিস বন্ধ করে দেয়। রাতে ফের পার্টি অফিস খুলে উত্তেজনা ছড়ানো হয়। আমাদের সমর্থকেরা পুলিশ ডেকেছে অভিযোগ করে হামলা চালানো হয়। আমাদের দুই সমর্থক জখম হয়েছেন।” তৃণমূলের কোচবিহারের অন্যতম জেলা সম্পাদক পার্থনাথ সরকার বলেন, “সরকারি জমিতে পার্টি অফিস করতে আমরা চাই না। সে জন্য প্রশাসনের তরফে জমির মালিকানা খতিয়ে না-দেখা পর্যন্ত পাটি অফিস বন্ধ রাখার পরামর্শ নিয়ে বিরোধিতা করা হয়নি। তার পরেও রাতে কয়েক জন কর্মী অফিস খুললে সিপিএমের লোকেরা হামলা চালায়। ৪ জন জখম হন।”
|
সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে ফরওয়ার্ড ব্লক পঞ্চায়েত সদস্যের ভাইকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য কোচবিহারে। শনিবার রাতে কোতোয়ালি থানার ঢাংঢিংগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মরা নদীর কুঠি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত যুবকের নাম সুবল বর্মন (২৪)। পারিবারিক চাষবাস দেখাশোনার পাশাপাশি ওই যুবক চাকরির চেষ্টা করছিলেন। শনিবার রাত একটা নাগাদ যুবকের ঘর থেকে গোঙানির শব্দ ভেসে এলে পাশের ঘর থেকে দাদা ধরণী বর্মন ছুটে যান। ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় পিছনের খোলা জানালা দিয়ে তিনি ঘরে ঢুকে দেখেন ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতী সিঁদ খেটে ঘরে ঢুকে ওই যুবককে বুকে, পেটে কোপানোর পরে ঘরের শিকবিহীন একটি জানালা খুলে পালিয়ে যায়। কে, কেন ওই যুবককে খুন করল তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সুবল বর্মনের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় একটি খুনের মামলা শুরু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।” |