|
|
|
|
রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতাল |
অস্ত্রোপচারের পরেই মৃত্যু রোগীর, গাফিলতির নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা• রঘুনাথপুর |
অপারেশন থিয়েটারে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত চেয়ে হাসপাতালের সুপার ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার। সুপার সুভাষচন্দ্র ঘাটা জানিয়েছে, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গড়া হবে।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার সকালে পড়শির বাড়িতে দেওয়ার মেরামতির কাজ করার সময় দেওয়াল চাপা পড়ে আহত হয়েছিলেন সাঁওতালডিহি থানার উপরডি গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় দিমজুর কার্তিক বাউরি (৪০)। ওই দিনই তাঁকে রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কার্তিকবাবুর কোমরে চোট লেগেছিল। শনিবার দুপুরে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের এক অস্থি-বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক। কিন্তু অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের পরেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। ওই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের গাফিলতিতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে সুপারকে ঘিরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয় ও গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে রঘুনাথপুর থানার পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছনোয় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শনিবার বিকেলেই সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করে মৃতের পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মৃতের ছেলে কানাইয়ের অভিযোগ, “ওই চিকিৎসক আমাদের বলেছিলেন, ছোট মাপের অস্ত্রোপচার হবে বাবার শরীরে। ছোট মাপের অস্ত্রোপচার হলে বাবার মৃত্যু হল কী ভাবে? ওই চিকিৎসকের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।” পড়শি অজিত বাউরির দাবি, “অস্ত্রোপচার করার আগে নিয়মমাফিক যে-সব পরীক্ষা করার কথা, সেগুলি আদৌ করা হয়নি। কার্তিকবাবুর মৃত্যুর খবর জানার পরেই আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্রোপচারের আগের রিপোর্টগুলি দেখানোর দাবি করেছিলাম। কিন্তু তাঁরা তা দেখাতে পারেননি।” ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যাওয়া তৃণমূল নেতা তথা রঘুনাথপুর পুরসভার কাউন্সিলর বিষ্ণু মেহেতা, এসইউসি-র কর্মী বিপ্লব ভদ্ররা বলেন, “হাসপাতালের সুপারকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার দাবি জানানোর পাশাপাশি রোগী কল্যাণ সমিতির তরফে মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করার বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।” হাসপাতালের সুপার সুভাষবাবু জানান, ওই রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার পরে সফল ভাবেই অস্ত্রোপচার করে ভাঙা হাড়ে ‘নেল’ (ইস্পাতের ছোট রড) লাগানো হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পরে কার্তিকবাবু সুস্থই ছিলেন। সুপারের দাবি, “এর পরেই আচমকা তাঁর মৃত্যু হয়। দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সঠিক ভাবে বলা সম্ভব। তবে আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত করছি।” |
|
|
|
|
|